রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিংয়ে পাঁচ বছরের শিশু খন্দকার সামিউল আজিম ওয়াফিকে হত্যার ঘটনায় তার মা আয়েশা হুমায়রা এশা ও তার প্রেমিক শামসুজ্জামান বাক্কুর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
দুই আসামির মধ্যে শিশু সামিউলের মা আয়েশা হুমায়রা জামিনে ছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর আদালতে হাজির না হওয়ায় তার জামিন বাতিল করা হয়েছে। অপরদিকে প্রেমিক শামসুজ্জামান গ্রেফতারের পর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন
আর মামলার বাদি সামিউলের বাবা কে আর আজম বিচারচলাকালেই মারা গেছেন।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি দুই আসামির প্রত্যেককে একটি ধারায় পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
রায়ের পর্যবেক্ষণে তিনি বলেছেন, এশা ও বাক্কুর সম্পর্কের বিষয়টি জেনে ফেলায় শিশু সামিউলকে তারা হত্যা করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলা প্রমাণে সক্ষম হয়েছে।
‘এমন কাজ তারা করেছে, যে জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যাপ্ত নয়, সেজন্য তাদের মৃত্যদণ্ড দেওয়াই সমীচীন।’
সামিউলের বাবা কে আর আজমের বন্ধু ও ব্যক্তিগত আইনজীবী ইসলাম উদ্দিন বিশ্বাস এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ফারুক উজ্জামান ভূঁইয়া এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১০ সালের ২৩ জুন পরকীয়া প্রেমিক শামসুজ্জামানের সাথে মায়ের অনৈতিক কোনো ঘটনা দেখে ফেলায় সামিউলকে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুম করতে ফ্রিজে ঢোকানো হয়। পরে লাশটি বস্তায় ঢুকিয়ে ওই বছরের ২৪ জুন রাস্তায় ফেলে দেয়া হয়। একইদিন আদাবরের নবোদয় হাউজিং এলাকা থেকে সামিউলের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় নিহত শিশুর পিতা কে এ আজম ওইদিন আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার ওসি কাজী শাহান হক এ মামলায় বাক্কু ও এশার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরের বছর ১ ফেব্রুয়ারি ওই দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। এর সাত দিনের মাথায় আদালতে বাদি আজমের জবানবন্দি ও জেরা গ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
মামলার বিচার চলাকালে মোট ২২ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। গত ২৩ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।
মন্তব্যসমূহ