জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের ছয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না। শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’ দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ...

করোনায় স্থবির পুরো ইতালি, গৃহবন্দি সাড়ে ৬ কোটি মানুষ



করোনা ভাইরাসের ছোবলে পুরো ইতালি স্থবির হয়ে পড়েছে। শহরগুলো পরিণত হয়েছে ভুতুড়ে নগরীতে। পুরো দেশ যেন এক আতংকের নগরী। সোমবার রাতে আকষ্মিকভাবে পুরো দেশ রেডজোনের আওতাভুক্ত ঘোষণা করায় গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে দেশটির সাড়ে ৬ কোটিও বেশি মানুষ। আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মিউজিয়াম, থিয়েটার, সিনেমা, স্টেডিয়াম, কনসার্টসহ জনসমাগমের স্থানসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসও মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক রুটের ২টি বাদে অন্যান্য সব ফ্লাইট এবং ইউরোপের জনপ্রিয় অভ্যন্তরীণ বিমান- রাইন এয়ার এর সব ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে সরকারি ঘোষণার পরপরই সকাল থেকে সুপার মার্কেটগুলোতে দেখা গেছে মানুষের লম্বা লাইন ও প্রচন্ড ভিড়। ট্যুরিস্ট এলাকাগুলো একেবারে ফাঁকা। হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ সকল ব্যবসায় ধ্বস নেমেছে। অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশী বেকার হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রেস্টুরেন্ট, আলিমেন্টারি খোলা রাখা যাবে তবে প্রায় সকলেই বন্ধ করে দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ইতালিতে সোমবার রেকর্ড সংখক মানুষ ১৭৯৭ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৯৭ জন। যা পুরো বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। রবিবারও ঠিক একদিনেই সর্বোচ্চ সংখক নতুনকরে আক্রান্ত হয়েছে- ১৪৫৭ জন এবং মারা গেছে ১৩৬ জন। আর এ পর্যন্ত সবমিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৯১৭২ জন এবং মারা গেছে ৪৬৩ জন। এর আগে শনিবার ইতালি সরকার রেডজোনের আওতাভুক্ত উত্তরাঞ্চলের মিলানসহ ১৪টি শহরের এক কোটি ৬০ লাখ মানুষকে অবরুদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এরপরও নতুন রোগী আক্রান্তের সংখ্যা রাড়তে থাকায় সোমবার রাত ১০টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা) আকষ্মিকভাবে প্রধানমন্ত্রী জোসেপ্পে কন্তমে এক সংবাদ সম্মেলনে পুরো ইতালিকে রেডজোনের আওতাভুক্ত ঘোষণা করে। এরপরই বিভিন্ন শহরে সরকারি বাহিনি মাইকিং করে মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া ঘোষণা দিতে দেখা গেছে।

এদিকে, রাতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরপরই আতংক ছড়িয়ে পড়ে পুরো ইতালিতে। বিশেষকরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে সর্বত্র। সুপারশপগুলোতে মানুষের লম্বা লাইন ও প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। বাজার যেকোনো সময় বন্ধ করে দেয়া হবে এমন অশংকায় যে যেভাবে পারছে ক্রয় করছে। সুপারশপে বাজার নিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশী উম্মে সালমা এ প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘ ১২ বছরের প্রবাস জীবনে এমন অস্থির অবস্থা দেখিনি। যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতি মনে হচ্ছে।

আরেক প্রবাসী ইমরান মাতবর বলেন, ঘর থেকে বের হওয়াও এখন জীবনের জন্য বড় ঝুঁকি। উদ্বেগ ও আতংক বিরাজ করছে সর্বত্র। অন্যদিকে দেশের আত্মীয়-স্বজনরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

শহরগুলোর সবখানেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। অধিকাংশ অফিস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আদালতের কার্যক্রম ৩১ মে পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতির উন্নতির জন্য আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সাময়িকভাবে সকলপর্যায়ের কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। যাতে নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি না পায়।

বর্তমানে ইতালি থেকে এ্যামিরেটস ও কাতার এয়ার ওয়েজের একটি করে ফ্লাইট চালু রয়েছে। অন্য সব ফ্লাইট ইতোমধ্যে বাতিল করেছে। নতুনকরে মঙ্গলবার ইউরোপের অভ্যন্তরীন বিমান রাইন এয়ার এর সব ফ্লাইট ইতালি থেকে যাত্রি পরিবহন এবং প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা দিয়েছে। রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসও মঙ্গলবার থেকে সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেছে, পরবর্তী নির্দেশ দেয়া না পর্যন্ত সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

মন্তব্যসমূহ

Unknown বলেছেন…
May Almighty Allah help us overcome this deadly disease.