বরগুনার বহুল আলোচিত মো. শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ (২৬) হত্যা মামলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ কিশোরের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ছয়জনকে ১০ বছর, চারজনকে পাঁচ বছর ও একজনকে তিন বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। খালাস দেওয়া হয়েছে তিনজনকে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে রায় পড়া শুরু হয়ে ২টা ৪০ মিনিটে শেষ হয়। সকালে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ কিশোর আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামিদের মধ্যে আট কিশোর জামিনে থেকে নিজেরাই আদালতে হাজির হয়। অপর ছয় আসামিকে প্রিজনভ্যানে করে পুলিশ কারাগার থেকে হাজির করে।
রায়কে ঘিরে সকাল থেকে বরগুনা জেলা দায়রা আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। এ ঘটনায় দুই ভাগে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম ভাগে সম্পন্ন হয় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিচার। দ্বিতীয় ভাগে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিচার শুরু হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জনের রায় দেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। ওই দিন রায়ে মিন্নিসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হয়। চারজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ছয় আসামি হলেন রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯) ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯)।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. মুসা (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সাইমুন (২১)।
রায়ের আগে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হাইকোর্ট থেকে জামিনে ছিলেন। আর মো. মুসা হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক ছিলেন। যদিও মামলার প্রধান আসামি মো. সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়নবন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। শিশু আদালতের মামলায় মোট ৭৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
গত ১৪ অক্টোবর রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক এবং ৭৪ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপনের পর আজ রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন আদালত।
মন্তব্যসমূহ