হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

জামায়াত ও তারেক জিয়ার সাথে জাতীয় ঐক্যের সম্পর্ক নাই: ড. কামাল


গণফোরামের সভাপতি ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জামায়াত এবং তারেক জিয়ার সাথে জাতীয় ঐক্যের কোন সম্পর্ক নাই।

সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বা কোনো রাষ্ট্রীয় পদ পাওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।


ড. কামাল হোসেন বলেন, যারা ক্রমাগতভাবে আমার বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ ভিত্তিহীন ব্যক্তিগত আক্রমণ করে চলেছেন তাদের আমি এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বা কোনো রাষ্ট্রীয় পদ পাওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার নেই। একটি গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুমাত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আমি কাজ করে যাব।

এই প্রবীণ আইনজীবী বলেন, জনগণের এই উদ্বেগ ও আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশের নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য গণফোরাম ব্যাপক আলোচনার ভিত্তিতে সাতটি দাবির ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি।

সাতটি দাবি হলো- বর্তমান সংসদ ভেঙে দেওয়া, মন্ত্রিসভার পদত্যাগ, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় নির্বাহী বিভাগ বা সরকার গঠন, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া, বাকস্বাধীনতা ও রাজনীতির সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করা, জনগণের আস্থা আছে- এমন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করা।

ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। আমাদের সাত দফা দাবি প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ জাতীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মতৈক্যে পৌঁছেছি, যার ফলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে একটি উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

ড. কামাল বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের ঐক্য বজায় রাখার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কাজ করে যাবে, যাতে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বত্র গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষে আমাদের দাবিগুলো আদায়ের জন্য আমরা এমন ব্যক্তি ও দলের সাথে কাজ করব, যারা একটি গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সংকল্পবদ্ধ এবং যারা এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চান যেখানে ধর্ম, জাতিগত পরিচয় ও লিঙ্গের ভিত্তিতে কারো বিরুদ্ধে বৈষম্য করা হবে না। আমরা বিভাগ ও জেলাপর্যায়ে সমাবেশ করব।

সংবিধান প্রণেতা বলেন, আমাদের এই ঐক্যের সাথে জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নাই। এটা আগেও পরিষ্কার করে বলা হয়েছে। এখনো বলছি, স্বাধীনতাবিরোধী কোনো শক্তির সঙ্গে আমাদের ঐক্য নয়। আর একটি বিষয় পরিষ্কার করে বলতে চাই- আমরা ঐক্য করেছি কয়েকটি রাজনৈতিক দল মিলে। কিন্তু কোনো ব্যক্তি বিশেষের সাথে আমাদের ঐক্যের কোনো সম্পর্ক নাই। বিশেষ করে তারেক রহমানের সাথে।

গণফোরামের সভাপতি বলেন, আমরা দল হিসেবে বিএনপির সাথে ঐক্য করেছি। কিন্তু ব্যক্তি তারেক রহমানের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা কয়েকটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ঐক্য করেছি। আর সেই জন্য জনমত গঠনে কাজ করছি।

গতকাল জাতীয় সংসদে ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে যেসব মন্তব্য করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব নিয়ে মন্তব্য করার প্রয়োজন মনে করছি না। যদি কখনো প্রয়োজন মনে করি তাহলে তখন মন্তব্য করব। আর সংসদে তারা অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করতেই পারে।

সংবিধানের বাইরে কোনো দাবি মানা হবে না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, এই সংবিধান তো তারা সংশোধন করছে। আগের সংবিধানে আমাদের দাবিগুলো ছিল। আমরা আগের সংবিধানে যেগুলো ছিল সেগুলোই বলেছি।

দাবি মানা না হলে কর্মসূচি কেমন হবে জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, আমরা আপাতত সারা দেশে যে জনমত গঠন করব তার মাধ্যমে আশা করি দাবি আদায় হবে। তারপরও যদি দাবি আদায় না হয়, তাহলে গভীরভাবে ভেবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

মন্তব্যসমূহ