ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পরের দিন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. ইসমাইল হোসেনের (৪৮) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার বিকেলে কক্সবাজার শহরের পালংকি আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় হোটেলের ব্যবস্থাপক ও এক কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
নিহত নেতার স্ত্রীর দাবি, আওয়ামী লীগের ওই নেতাকে খুন করে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে।
ডা. ইসমাইল হোসেন তাঁর ফেসবুক চালাতেন ইসমাইল মেহেদী নামে। ওই ফেসবুক পাতায় গতকাল শনিবার তিনি দুটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব অধ্যাপক শফিউল্লাহ তাঁকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল্লাহ। তাঁর দাবি, ইসমাইলের সঙ্গে তাঁর কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না।
গতকাল রাত ৮টায় এক স্ট্যাটাসে আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল হোসেন উল্লেখ করেন, ‘শফিউল্লাহ পাপ, অন্যায় করতে টাকা খরচ হয় তোমার নোংরামি তুমি বন্ধ করবে? জানি, তুমি সংগঠনের চরম ক্ষতি করছ, তোমার মধ্যে দেশপ্রেম নেই, বাইশারির দুজন সাংবাদিক জানে তুমি আমাকে হুমকি দিয়েছ, মনে রেখ নেতৃত্ব তুমি পাবে না। তোমার পূর্ব পুরুষের ইতিহাস সবাই জানে। হুমকি দিয়ে লাভ নাই কারণ তুমি অবৈধ টাকার মালিক, ৭১-এর চেতনা তোমার নাই। আমি গরিব হতে পারি, নীতিহীন নই।…’
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইসমাইল হোসেনের গতকালের ওই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ জেলায় অন্যদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। চায়ের দোকান থেকে অফিস আদালতের সবখানে এ নিয়ে কথা হয়।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী জোসনা আক্তার বলেন, তাঁর স্বামীকে খুন করা হয়েছে। তাঁর আত্মহত্যা করার মতো পারিবারিক কোনো অশান্তি ছিল না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক শফিউল্লাহ বলেন, ‘কক্সবাজারের একটি হোটেলে ইসমাইলের আত্মহত্যার খবর পেয়েছি। আমি গভীরভাবে শোকাহত।’
ফেসবুক স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে শফিউল্লাহ বলের, ‘আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা ছিল না। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার দূরত্ব ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দূরত্বটা অনেকাংশে কমেছে। তাঁকে (ইসমাইল) হুমকি দেওয়ার কথাটি সত্য নয়। এটি আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।’
কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুল আজম জানান, কক্সবাজারের আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ থেকে ইসমাইল হোসেনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেলের ব্যবস্থাপক ও রুম বয়কে আটক করা হয়েছে। ইসমাইলের মৃত্যুর কারণ তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে। এনটিভি
মন্তব্যসমূহ