হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

‘সুলতান সুলেমানের’ ধাক্কায় বিপন্ন দেশিও নাটক


বিদেশি টিভি সিরিয়াল বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে দেখানো বন্ধের দাবি তুলেছেন বাংলাদেশের নাট্যশিল্পীরা।
বুধবার ঢাকায় বিদেশি টিভি সিরিয়ালের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তারা বলেছেন, বিদেশি টিভি সিরিয়ালের আগ্রাসনে বাংলাদেশের টেলিভিশন নাটকের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হতে চলেছে।
টিভি নাটককে বিভিন্ন দাবী নিয়ে অভিনয় শিল্পীরা বুধবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন।
শহীদ মিনারের সমাবেশে অভিনেতা তৌকির আহমেদ বলেন, " আমরা যদি এখনই পদক্ষেপ না নিতে পারি, তাহলে এফডিসি'র যে অবস্থা হয়েছে, আমাদেরও একই অবস্থা হবে।"
টিভি নাটকের সাথে সংশ্লিষ্টরা দাবী করছেন বর্তমানে দেশের কয়েকটি টিভি চ্যানেলে বিদেশী সিরিয়াল বাংলা ডাবিং করে যেভাবে প্রচার করা হচ্ছে সেটি বন্ধ করতে হবে।
শিল্পীদের ভাষায় বাংলায় ডাবিং করা এসব বিদেশী সিরিয়াল বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করেনা।
বাংলায় ডাবিং করা সিরিয়ালের মধ্যে দর্শকদের মাঝে সবচেয়ে বেশি সাড়া তৈরি করেছে সুলতান সুলেমান। তুরস্কের অটোম্যান শাসনকালের সময় নিয়ে এ সিরিয়ালটি একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে প্রচার করা হচ্ছে।
এছাড়া আরো কয়েকটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে এ ধরনের সিরিয়াল প্রচারিত হচ্ছে যেগুলো দর্শকদের মনোযোগ টানছে।
নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা গাজী রাকায়েত বলেন, " প্রত্যেকটা চ্যানেলে যদি সপ্তাহে চার-পাঁচদিন করে ডাবিং করা বিদেশী সিরিয়াল চলে তাহলে ছয়-সাত কোটি টাকার শিল্পী সম্মানী নষ্ট হচ্ছে। প্রায় ৫০ পার্সেন্ট শুটিং হাউজে কাজ নাই।"
বাংলাদেশের নাটকের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা মোশারফ করিম বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন বিদেশী টিভি সিরিয়ালগুলোর সাথে বাংলাদেশী নাটকের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা বেশ মুশকিল। কারণ সেসব সিরিয়াল নির্মাণের জন্য যে অর্থ খরচ করা হয়, বাংলাদেশের নাটকের বাজেট তার তুলনায় নগণ্য।
তিনি মনে করেন বাংলাদেশের নাটকের মান বাড়লে দর্শক বাড়বে। আর নাটকের মান বাড়াতে হলে পর্যাপ্ত পরিমান টাকা বিনিয়োগ করতে হবে বলে মোশারফ করিম মনে করেন।
মি: করিম বলেন, " বাংলাদেশের নাটক থেকে আর্ট ডিরেকশন উঠে গেছে। ভালো মেকাপম্যান উঠে গেছে, ড্রেস ডিজাইনার উঠে গেছে। কারণ এগুলোর খরচ লাগে।"
ইদানিংকালে বাংলাদেশের বেশ কিছু কোম্পানী ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। কারণ তারা মনে করেন ভারতীয় চ্যানেল যেভাবে বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়েছে সেজন্য সেসব চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিলে তাদের দর্শকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
কিন্তু অভিনয় শিল্পী এবং টেলিভিশনের সাথে সংশ্লিষ্টদের অনেকেই বলছেন এতে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কোন কোম্পানী যাতে বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দিতে না পারে সেজন্য তারা সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন।
এছাড়া বাংলাদেশের কেবল অপারেটরা যাতে বিদেশী টিভি চ্যানেল অবাধে ডাউনলিংক করে বাংলাদেশে প্রচার করতে না পারে সে দাবিও তুলছেন অভিনয় শিল্পী এবং টেলিভিশনের সাথে সংশ্লিষ্টরা। এখানে বিদেশী চ্যানেল বলতে তারা মূলত ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর দিকেই ইঙ্গিত করছেন।
কারণ বাংলাদেশে হিন্দি চ্যানেলগুলোর দর্শকপ্রিয়তার কারণে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে টেলিভিশন সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন।
কিন্তু তারা যেসব দাবি করছেন সেগুলো বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে কতটা যৌক্তিক? সরকার এসব দাবীকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে?
নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা গাজী রাকায়েত বলছিলেন, " আমরা আসলে কোন কিছু বন্ধ করার পক্ষে না। কিন্তু আমরা যদি না খেয়ে মারা যাই, তাহলে কী করবো?"
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলছেন এসব দাবি খতিয়ে দেখার জন্য সরকার এরই মধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে তথ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, " বিশ্বায়নের এ যুগে দাবিগুলো যদি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সাংঘর্ষিক না হয় তাহলে সেগুলো আমরা কার্যকর করার ব্যবস্থা নেব। মোট কথা আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।বিবিস

মন্তব্যসমূহ