হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

পুতিনের হুঁশিয়ারি : ‘গাজায় ইসরাইলের অভিযানের পরিণতি হবে ভয়াবহ’

 




ইসরাইলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ট্যাংকের সাহায্যে স্থল অভিযান শুরু করেছে। হামাস যোদ্ধাদের ‘নির্মূল’ করাই এই অভিযানের মূল লক্ষ্য। গতকাল শুক্রবার ইসরাইল সরকার গাজা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে যাওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিল। যদিও হামাস যোদ্ধারা গাজার লোকজনকে নিজ নিজ বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল।


এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘গাজায় নিরীহ জনগণের ওপর ইসরাইলের স্থল অভিযানের পরিণতি হবে ভয়াবহ।’


শুক্রবার ইসরাইলের সেনাদের পদাতিক বাহিনী ও ট্যাংক গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে। একে প্রতিশোধ অভিযানের শুরু বলে জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বার্তা সংস্থা এএফপি এই খবর জানিয়েছে।


এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসকে নির্মূলে গাজায় টানা এক সপ্তাহ ধরে ভারী বোমাবর্ষণের পর এই প্রথম স্থল অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল।


গাজা ভূ-খণ্ডের উত্তরাংশের ১১ লাখ বাসিন্দাকে সরে যেতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয় ইসরাইল। সে সাথে সীমান্তে ট্যাংকের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক সেনা সমাবেশ করে।


ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, আগামী দিনগুলোতে তারা গাজা শহরে ‘ব্যাপকহারে’ অভিযান চালাবে। পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বেসামরিক নাগরিকরা ফিরে আসতে পারবেন না।


ইসরাইলের এই ঘোষণার পর গাজা শহর ছাড়তে দেখা যায় অনেক বাসিন্দাকে। তবে হামাস তাদের যার যার বাড়িতে থাকার আহ্বান জানায়। ফিলিস্তিনিদের রক্ষার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের কথাও বলে হামাস যোদ্ধারা। মসজিদের মাইক থেকেও স্থানীয়দের যার যার বাড়িতে অবস্থান করার আহ্বান জানানো হয়।


এদিকে জাতিসঙ্ঘের পক্ষ থেকে ইসরাইলের ওই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। না হলে ভয়ঙ্কর মানবিক সঙ্কট তৈরি হবে বলেও সতর্ক করা হয়।


কিন্তু ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়াল অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগারি পরে বলেন, তাদের পদাতিক বাহিনী ট্যাংকের সহায়তা নিয়ে গাজার ভেতরে অভিযান চালিয়েছে। ফিলিস্তিনি হামাস যোদ্ধাদের ‘নির্মূল’ করার পাশাপাশি হামাসের হাতে জিম্মি ইসরাইলিদের মুক্ত করার চেষ্টা করছে তারা।


এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গাজায় ইসরাইলের অভিযান নিয়ে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের স্থল অভিযানে বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ‘একেবারে অগ্রহণযোগ্য’ হবে মন্তব্য করে সতর্কবার্তা দিয়েছেন।


শুক্রবার কিরগিজিস্তানের রাজধানী বিশকেকে এক আলোচনা সভায় একথা বলেন পুতিন।


ইনডিপেনডেন্ট স্টেটস অব কমনওয়েলথ-এর প্রধানদের অংশগ্রহণে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।


সেখানে বক্তৃতাকালে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আবাসিক এলাকায় ভারী অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার সব পক্ষের জন্যই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর পরিণতিও হবে ভয়াবহ।’


ফিলিস্তিন-ইসরাইলের বর্তমান উত্তেজনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করলেন পুতিন।


তিনি বলেন, বর্তমান উত্তেজনার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ব্যর্থ নীতির প্রত্যক্ষ ফলাফল। যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের বন্দোবস্তকে একচেটিয়া করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সমঝোতা খোঁজার বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিল না এবং ফিলিস্তিনি জনগণের মৌলিক স্বার্থকে বিবেচনায় নেয়নি তারা।


ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমঝোতায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করার জন্য রাশিয়ার প্রস্তুতির কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন পুতিন।


এদিকে হামাসের সাথে সংঘাত সমগ্র অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া রোধকল্পে ইসরাইলকে সামলাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান।


শুক্রবার বৈরুতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহ বলেছেন, তেহরান লেবাননের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্যসমূহ