জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের ছয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না। শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’ দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ...

ন্যাটো নিয়ে সমর্থন আশা না করতে সুইডেনকে এরদোয়ানের হুঁশিয়ারি

 




ন্যাটোতে যোগ দেয়া নিয়ে তুরস্কের কাছ থেকে কোনো সহায়তার আশা করা সুইডেনের উচিত নয় বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান।


সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে একটি বিক্ষোভে মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ কুরআন পোড়ানোর কয়েক দিন পর এমন হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।


রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পরে সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আবেদন করেছে। কিন্তু এতে যোগ দিতে হলে ন্যাটোর সদস্য দেশ তুরস্কের অনুমোদন দরকার।


সুইডেনে যে বিক্ষোভে কুরআন পোড়ানো হয়েছিল, তার আগে কুর্দিরা একটি বিক্ষোভ করেছিল। সেখানে এরদোগানের কুশপুত্তলিকা ঝুলানো হয়।


এর প্রতিক্রিয়ায় এরদোয়ান বলেন, ‘সুইডেনের আমাদের কাছ থেকে ন্যাটোর জন্য সমর্থন আশা করা উচিত নয়।’


‘এটা স্পষ্ট যে যারা আমাদের দেশের দূতাবাসের সামনে এই ধরনের অপমানজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা তাদের আবেদনের বিষয়ে আমাদের কাছ থেকে আর কোনো সহায়তা আশা করতে পারে না।’


গত শনিবার অনুষ্ঠিত ওই বিক্ষোভের জন্য আগে থেকেই অনুমতি দিয়েছিল সুইডিশ কর্তৃপক্ষ। তবে কুরআন পোড়ানোর কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি।


যে বিক্ষোভে কুরআন পোড়ানো হয়েছিল সেটির নিন্দা করেছেন এরদোগান। কট্টর ডানপন্থী একজন ডেনিশ রাজনীতিবিদ এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এরদোগান বলেন, বাক-স্বাধীনতার নামে ইসলাম ধর্মকে অবমাননার বৈধতা দেয়া যায় না। সুইডিশ সরকারও বিক্ষোভের সমালোচনা করেছে।


গত শনিবার সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রম বলেন, ‘সুইডেনে মত-প্রকাশের স্বাধীনতা বেশ বিস্তৃত। তবে এর অর্থ এই নয় যে সুইডিশ সরকার বা আমি, বিক্ষোভে প্রকাশিত মতামতকে সমর্থন করি।’


সোমবার এরদোগানের মন্তব্যের জবাব দেয়ার আগে বিলস্ট্রম বলেছেন, তিনি কোনো মন্তব্য করার আগে তুর্কি নেতা ঠিক কী বলেছেন তা তিনি বুঝতে চান।


তিনি আরো বলেন, ‘ন্যাটো নিয়ে সুইডেন, ফিনল্যান্ড ও তুরস্কের মধ্যে যে চুক্তি বিদ্যমান রয়েছে তা মেনে চলবে সুইডেন।’


রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর ফিনল্যান্ডের সাথে সুইডেনও ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আবেদন করে। কিন্তু সাম্প্রতিক বিক্ষোভ উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।


ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোতে মত-প্রকাশের স্বাধীনতা একটি ‘মূল্যবান জিনিস’ এবং এই কাজগুলো অনুচিত হলেও তা ‘স্বাভাবিকভাবে অবৈধ’ ছিল না।


মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ তুরস্ক বিক্ষোভের অনুমতি দেয়ার সুইডিশ সরকারের সিদ্ধান্তকে ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।


‘যখন আমরা কিছু বলি, আমরা সততার সাথে বলি। এবং যখন কেউ আমাদের অসম্মান করে, আমরা তাদেরকে তাদের প্রাপ্য জায়গায় রাখি।’


প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার বলেছেন, তিনি সুইডিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর তুরস্ক সফর বাতিল করেছেন। কারণ, এসব 'অগ্রণযোগ্য বিক্ষোভের' বিষয়ে সুইডেন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।


সাম্প্রতিক সময়ে সুইডেনের কয়েকজন মন্ত্রী তুরস্ক সফর করেন। তখন আশা জেগেছিল যে সুইডেনের ন্যাটাতে যোগদানের বিষয়ে হয়তো আপত্তি তুলে নেবে তুরস্ক।


যেহেতু তুরস্ক ইতোমধ্যে ন্যটোর সদস্য, সেজন্য তারা অন্য দেশকে যোগদানকে বাধা দিতে পারে। এরইমধ্যে সুইডেনের কাছে বেশ কিছু দাবি করেছে তুরস্ক এর মধ্যে রয়েছে কিছু কুর্দি নাগরিককে তুরস্কের কাছে ফিরিয়ে দেয়া, যাদের সন্ত্রাসী বলে দাবি করেছে তুরস্ক।


চলতি মাসের শুরুর দিকে, সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, স্টকহোমে কুর্দি বিক্ষোভকারীরা যারা একটি ল্যাম্পপোস্ট থেকে তুরস্কের রাষ্ট্রপতির কুশপুত্তলিকা ঝুলিয়ে দিয়েছিল তারা সুইডেনের ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আবেদনকে ভণ্ডুল করে দিতে চায়।


একজন সুইডিশ মন্ত্রী এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তবে তুরস্ক বলেছে যে নিন্দা জানানোই যথেষ্ট নয়।

সূত্র : বিবিসি


মন্তব্যসমূহ