শুক্রবার ক্লাসের সিদ্ধান্ত হয়নি, ভুলবশত ফেসবুকে পোস্ট হয়েছিল

শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বরাতে যে বক্তব্যটি শিক্ষামন্ত্রণালয় তাদের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট দিয়েছিল তা ভুলবশত বলে জানিয়েছে তারা। অপর এক পোস্টে আজ রোববার (৫ মে) বিকেলে ৪টার দিকে এই তথ্য জানায় তারা। এই পোস্টে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে,  শুক্রবারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ফেসবুক পেজ থেকে আগের পোস্টটি সরিয়ে নতুন পোস্টে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে ‘শুক্রবার শিক্ষা খোলার বিষয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড পেজে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে দেওয়া তথ্য ভুলবশত পোস্ট করা হয়েছে। এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত শনিবারের পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’  এর আগে একই পেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের এখন বছরে স্কুলের মোট কর্মদিবস ১৮৫টি। এর মধ্যে ২০ দিন নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নের জন্য রাখা হয়েছে। স্কুলের কর্মদিবস যদি আরও কমে যায়, শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে।’

বিয়ের ছ’মাসের মধ্যে কোভিডে মৃত্যু স্বামীর, চিকিৎসার ৪০ লক্ষ টাকা ত্রাণ তহবিলে দান তরুণীর!

 





ছোটবেলার আমলা হওয়ার স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরেই জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান মৌসুমী। ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন। স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে সবে সংসার শুরু করেছিলেন মৌসুমী। কিন্তু ভাগ্য যে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে, কল্পনাও করতে পারেননি। গোটা দেশে তখন কোভিড স্ফীতি চরম পর্যায়ে। ২০২১-এর ৫ মে। কোভিডে আক্রান্ত হলেন মৌসুমীর স্বামী অভিষেক। প্রথমে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় অভিষেককে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ার চিকিৎসকরা জানালেন তাঁর ‘এক্সট্রাকর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন' (একমো)-র প্রয়োজন। ঘটনা ভারতের ওড়িশার


ব্যয়বহুল এই চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ ছিল না মৌসুমীদের। তা ছাড়া ওড়িশায় এই চিকিৎসাও সহজলভ্য ছিল না। কিন্তু একমো-র জন্য এত টাকা পাবেন কোথায়? নেটমধ্যমে সাহায্য চেয়ে আবেদন করেন মৌসুমী। তাতে সাড়াও পেতে শুরু করেন যথেষ্ট। তার পরই অভিষেককে নিয়ে কলকাতায় চলে আসেন চিকিৎসার জন্য।


জুন মাস। অভিষেককে বিমানে করে কলকাতায় আনা হয়েছিল। ৮৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালানোর পর হেরে যান অভিষেক। বিয়ের ছ’মাসের মাথায় স্বামীকে হারালেন মৌসুমী।

মৌসুমী মোহান্তি। ওড়িশার ভদ্রকের তরুণী। বিয়ে হয়েছিল মন্দারির বাসিন্দা অভিষেক মহাপাত্রের সঙ্গে। মৌসুমী জানান, অভিষেকের চিকিৎসার জন্য ৪০ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে। এখনও অনেকে সাহায্য করছেন। কিন্তু যাঁর চিকিৎসার জন্য সেই টাকা, তিনিই যখন নেই, সেই টাকা অন্য কারও কোভিড চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন মৌসুমী। তিনি বলেন, “ওই সময় যে ভাবে মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, আর্থিক সহযোগিতা করেছেন, লকডাউনের কারণে আর্থিক টালামাটাল অবস্থার মধ্যেও যে ভাবে তাঁরা এগিয়ে এসেছেন তা সত্যিই অভাবনীয়। আমি কৃতজ্ঞ সেই সকল মানুষের কাছে।”


গত ১৭ জানুয়ারি বাবাকে সঙ্গে নিয়ে ভদ্রকের জেলাশাসকের দফতরে যান মৌসুমী। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৩০ লক্ষ টাকা দান করেন। বাকি ১০ লক্ষ টাকা জেলার রেড ক্রস সোসাইটি-তে দান করে দেন। মৌসুমী বলেন, “আমরা সবাই অতিমারির ফল ভুগছি। যদি এক জনের জন্য রাখা চিকিৎসার টাকা অন্য কারও কাজে লাগে, তার চেয়ে আর বড় কী-ই বা হতে পারে। যে হেতু অভিষেক আর আমাদের মাঝে নেই, তাই ওঁর চিকিৎসার জন্য সংগ্রহ করা টাকা দুঃস্থ মানুষদের চিকিৎসার কাজে লাগাতে চাই। তাই সেই টাকা দান করলাম।”


এখনও অনেকে সাহায্য করার জন্য ফোন করছেন মৌসুমীকে। পাশাপাশি এমন অনেক মানুষও ফোন করছেন, যাঁরা ঠিক মতো চিকিৎসা করাতে পারছেন না। মৌসুমী জানিয়েছেন, কিছু টাকা তাঁর হাতে রয়েছে, সেই টাকা ওই মানুষদের চিকিৎসার কাজে লাগাবেন।


বিজ্ঞানে স্নাতক মৌসুমী। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন আমলা হওয়ার। এক স্বপ্ন বিয়ের ছ’মাসের মধ্যেই ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। এখন আমলা হওয়ার স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরেই জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান মৌসুমী। ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন। মৌসুমীর বাবা চিত্তরঞ্জন মোহান্তি একটি অসরকারি সংস্থার পিওন। তিনি বলেন, “মেয়ে নতুন পথে এগিয়ে যাক। ভদ্রকের জেলাশাসক মৌসুমীকে কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। রাজ্যে এখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি জারি। তাই নির্বাচন শেষ হলেই মৌসুমীর কাজে ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।”


আনন্দবাজার পত্রিকা

মন্তব্যসমূহ