হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

সব হারিয়ে ফিলিস্তিনি শিশুর প্রশ্ন ‘আমি এখন কী করব?

 





টানা সাত দিন ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান ও কামান হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। 


কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, বর্বরোচিত এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ১৮৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ৫৫ শিশু ও ৩৩ জন নারী। 



এতো গেল নিহতের সংখ্যা। আহত শিশুর সংখ্যাও কম নয়। আবার আহত না হলেও সাত দিনের হামলায় অনেক শিশু এতিম হয়েছে। বা-মা ও স্বজন হারিয়েছে তারা। ইসরাইলি বর্বরতায় ফিলিস্তিনি শিশুদের করুণ অবস্থা বর্ণনাতীত।


সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে স্বজন হারানো এমনই এক শিশুর করুণ আর্তনাত।


ভিডিওতে ওই শিশুর কান্না আর অসহায়ত্ব একদিনেই দেখেছে ৪০ লাখের বেশি মানুষ। পাষাণ হৃদয়ও গলে যাবে সেই শিশুর আকুতি শুনে।


মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পোস্ট করেছে। ক্যাপশনে লিখেছে শিশুটির আর্তনাত - আমি জানি না এখন আমি কি করব। 


সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, দশ বছরের ওই শিশুর নাম নাদাইন আবদেল তাইফ। ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত প্রতিবেশী বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে শিশুটি জানে না জীবনের বাকিটা সময় কীভাবে কাটাবে!ওই হামলায় প্রতিবেশী ৮ শিশু ও ২ নারী নিহত হয়েছে। শিশুটি এখন স্বজন হারিয়ে একেবারেই একা।


ভিডিওতে দেখা গেছে, ১০ বছরের মেয়েটির দুচোখ কান্নার পানিতে ভরে আছে।


ইসরাইলি বাহিনীর গোলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া প্রতিবেশীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাইফ নামের মেয়েটি বলছে, ‘আমি এখন কী করব? কী করে সামলাব? আমার তো মোটে ১০ বছর বয়স। এসব আর সহ্য করতে পারছি না!আমি সবসময়ই অসুস্থ থাকি, কিছুই করতে পারি না। আমি আমার দেশবাসীকে সাহায্য করতে ডাক্তার হতে বা কিছু একটা করতে চাই। কিন্তু কী করব, আমি তো একজন শিশু! আমার ভয় করছে। আমার নিজের লোকজনের জন্য আমি যে কোনো কিছু করব! কিন্তু কী করতে হবে, সেটা জানি না।’


ভিডিওতে ইসরায়েলি হামলার কারণ জানতে চেয়ে চোখের জলে ভাসিয়েছে তাইফ বলেছে, আমরা কী করেছি? এটাই কি প্রাপ্য আমাদের? 



উল্লেখ্য, ইসরাইলি বাহিনীর এবারের হামলায় ফিলিস্তিনের নিষ্পাপ শিশুরাই বেশি মারা পড়ছে। গতকাল (রোববার) সপ্তম দিনের হামলায় ১৩ শিশুসহ অন্তত ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। চলমান সংঘাতে একদিনের হামলায় এত বেশি সংখ্যক মৃত্যু এই প্রথম। 


ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদ্রায়ির টুইটারে গত শুক্রবার দেওয়া এক তথ্য মতে, এদিন রাতে ৪০ মিনিটে গাজার ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে ৪৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরাইল। 


ওই হামলায় নিজেদের ঘরেই অবস্থান কালে মারা যান তিন শিশুসহ এক মা। পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে ১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন ৪০ মিনিটের ওই হামলায়। 


এসব হামলার ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন হাজার হাজার পরিবার। তবুও প্রাণে রক্ষা পাচ্ছে না। ধ্বংসস্তুপের নিচে পাওয়া যাচ্ছে শিশুদের লাশ।


মন্তব্যসমূহ