কর্তৃপক্ষের সতর্কতার ভেতর দিয়েই সুপার টাইফুন গনি রোববার ফিলিপাইনে আঘাত হেনেছে। টাইফুনটি এ অঞ্চলের সবচেয়ে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিন লাখের বেশি মানুষ সেখান থেকে তাদের বাড়িঘর ফেলে চলে গেছে।
রাষ্ট্রীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাস সংস্থা জানায়, বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুনটি ক্যাটানডুয়ানস দ্বীপে আঘাত হেনেছে সকাল ৪টা ৫০ মিনিটে (গ্রিনিজ মান সময ২০৫০ টায় শনিবার) । টাইফুনের প্রভাবে এখানে ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে বলা হয়েছে, পরবর্তী ১২ ঘণ্টায় বিকল অঞ্চল এবং লুজন ও ক্যাটানডুয়ানেসের মূল দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত এলাকা জুড়ে তীব্র বেগে বাতাস বয়ে যাবে এবং মুষলধারে বৃষ্টি হবে।
গনি ফিলিপাইনের কাছাকাছি এসে সুপার টাইফুন আকারে তীব্র হয়ে ওঠায় এসব অঞ্চলের জন্য এক বিশেষ বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। একই অঞ্চলে টাইফুন মোলাভে এক সপ্তাহ আগে আঘাত হানে। ওই দুর্যোগে ২২ জনের প্রাণহানি হয়। ঝড়টি দক্ষিণ চীন সাগর পেরিয়ে ভিয়েতনামে যাওয়ার আগে নিচু গ্রাম ও কৃষিজমি প্লাবিত করে।
উপকূলীয় শহর লেগাজপি থেকে ২১ বছর বয়সী ফ্রান্সিয়া বোরাস, এএফপিকে তার বাড়ি থেকে জানায়, প্রচণ্ড বাতাস। আমরা গাছগুলো ভেঙ্গে পড়ার শব্দ শুনতে পাচ্ছি। এটি খুব শক্তিশালী।
আলবের প্রাদেশিক জননিরাপত্তা প্রধান সেড্রিক দায়েপ ডিজেডবিবি রেডিও স্টেশনকে জানান,তীব্র বাতাসের চাপে দুটি আশ্রয় কেন্দ্রের ছাদে ফাটল ধরলে সেখানাকার লোকেরা নিচের তলায় নেমে যায়।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা প্রধান রিকার্ডো জালাদ শনিবার বলেন, বিকল অঞ্চল থেকে প্রায় ১০ লাখ লোককে তাদের বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
মুখপাত্র আলেকিস নাজ রোববার জানান, তিন লাখ ১৬ হাজার লোক নিরাপত্তার লক্ষ্যে পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের অফিসের বাইরের গাছগুলিকে উল্টে পড়ে থাকতে দেখছি। এটা সত্যিই শক্তিশালী। বৃষ্টিও তীব্র।
ক্যাটানডুয়ানসের মানুষের সাথে আমাদের শেষ যোগাযোগ হয় সকাল সাড়ে ৩টায়। তারা আমাদের জানায় সেখানে বৃষ্টি এবং বাতাস প্রবল হওয়ায় ব্যবস্থাপনা অচল হয়ে পড়েছে।
প্রায় ৩১ মিলিয়ন মানুষ টাইফুন গনির কবলে। রাজধানীর বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগের ঝুঁকিতে মোবাইল ফোনে উচ্চতর সতর্কতা জানানো হয়েছে। দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল জরুরি সতর্কতা জারি করেছে বলেছে, ম্যানিলা ও এর আশেপাশের এলাকায় প্রবল বাতাস বয়ে যেতে পারে।
দুর্যোগ উপনীত হওয়ার আগেই কর্তৃপক্ষ টাইফুন উদ্ধারকারী যানবাহন, জরুরি অবস্থা মোকাবেলা টিম ও ত্রান সমাগ্রী পৌঁছে দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ আগ্নেয় কাদামাটির ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় দুটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, মায়োন ও তাল পর্যবেক্ষণ করেছে।
করোনাভাইরাস শুরুর পর থেকে স্কুল ছুটি হওয়ায় যে সব স্কুল খালি রয়েছে, সরকার পরিচালিত জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র ও জিমনেসিয়ামগুলির পাশপাশি সেগুলোও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ