হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

ফরাসিদের শাস্তি দেওয়ার ‍অধিকার মুসলমানদেরও আছে: মাহাথির

 




ফ্রান্স প্রেসিডেন্টে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্যের বিরুদ্ধে এরদোগানের তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর এবার নতুন করে বিশ্ব মিডিয়ার আলোচনায় এসেছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। 


তিনি বলেছেন, ‘অতীতের গণহত্যার কারণে লাখ লাখ ফরাসিকে হত্যা করার অধিকার মুসলমানদের আছে, কিন্তু মুসলমানরা তা করেনি। যেহেতু আপনারা (পশ্চিমা বিশ্ব) একজন ক্ষুদ্ধ ব্যক্তি কী করেছেন, সেটার জন্য সব মুসলমান ও মুসলমানদের ধর্মের ওপর দোষ চাপিয়ে যাচ্ছেন, তাই মুসলমানদেরও ফরাসিদের শাস্তি দেওয়ার ‍অধিকার আছে। বেশিরভাগ মুসলমান প্রতিশোধ নিতে ‘চোখের বদলে চোখ’ উপড়ে নেওয়ার আইন প্র্রয়োগ করে না।  মুসলমানরা এটা করে না।  তাই ফরাসিদের এটা করা উচিত হবে না’। 


বৃহস্পতিবার মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে তিনি ওই মন্তব্য করেন।  ৯৫ বছর বয়সী মাহাথির মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। 


নিজের টুইটার একাউন্টেও একই মন্তব্য পোস্ট করেছিলেন মাহাথির।  অবশ্য, টুইটার কর্তৃপক্ষ তাদের ‘বিদ্বেষ বিরোধী নীতি’-এর আওতায় এনে মাহাথিরের ওই টুইটবার্তাটি মুছে দিয়েছে।


তবে টুইটে ‘ফরাসিদের শাস্তি’ দেওয়ার কথা বললেও ফ্রান্সের বিদ্রুপাত্মক ম্যাগাজিন শার্লি এবদুতে ছাপা হওয়া মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর ব্য‍াঙ্গচিত্র ক্লাসে দেখানোর কারণে এক ফরাসি শিক্ষককে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই সমর্থন করেন না মাহাথির মোহাম্মদ। 


ফ্রান্সের এক ক্লাসে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর ব্যাঙ্গচিত্র দেখানোয় চলতি মাসেই ফ্রান্সের ওই শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করা হয়।  ওই হত্যাকাণ্ডের পর ফ্রান্সজুড়ে ইসলাম ও মুসলিম বিশ্বের নেতাদের নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্রগুলোর প্রদর্শনী করছে। এতে আরও উত্তেজনা বাড়ছে। 


আর এসব কিছুতে সরাসরি সমর্থন দিচ্ছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছেন, ফরাসি মূল্যবোধকে দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করা রক্ষণশীল ইসলামী মূল্যবোধকে ঠেকাতে তিনি তার প্রচেষ্টা কয়েকগুণ বাড়াবেন।  তার এ বক্তব্য বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মুসলমানকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।


তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান ফরাসি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে ম্যাক্রোঁর ‘মানসিক স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করা দরকার’ বলে মন্তব্য করেন। যার প্রতিক্রিয়ায় শার্লি এবদুতে এরদোয়ানের ব্যাঙ্গচিত্রও আঁকা হয়।


তুর্কি প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফ্রান্স। তারা আঙ্কারা থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে এরদোয়ান তুর্কিদেরকে ফরাসি পণ্য বয়কট করতে বলেছেন।


জাতিসংঘ কর্মকর্তার উদ্বেগ


এদিকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনাইটেড নেশনস এন্টি-এক্সট্রারেমিজম (জাতিসংঘের ধর্মীয় স্থাপনার সুরক্ষা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বিষয়ক সংস্থা)।  


সংস্থাটির প্রধান মিগুয়েল এঞ্জেল মোরাটিনস বলেছেন, ওইসব ব্যঙ্গচিত্রের পুনঃপ্রকাশ বিশ্বের বহু মুসলমানের জন্য অপমানজনক ও ভয়াবহ আক্রমণাত্মক।  ধর্ম ও পবিত্র ধর্মীয় প্রতীকগুলোর অবমাননা ঘৃণা উসকে দেয় এবং সহিংস উগ্রবাদ সমাজকে মেরুকরণ ও খণ্ডিত হওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। 


বুধবার তিনি এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।  


একইসঙ্গে তিনি ফ্রান্সের নিস শহরের গির্জায় ছুরি হামলার ঘটনায় নিন্দা জানান। 


বৃহস্পতিবার সকালে ছুরি হাতে এক ব্যক্তি নিস শহরের নটর ডেম বাসিলিয়াতে হামলা চালায়। এতে নারীসহ তিন জন নিহত হয়। নিস মেয়র একে সন্ত্রাসী হামলা বলে উল্লেখ করেছেন। সন্ত্রাসবাদের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।  ইউনাইটেড নেশনস অ্যালায়েন্স অব সিভিলাইজেশন্স এর প্রধান মোরাটিনস এই ঘটনাকে ‘বর্বরোচিত’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ধর্মপ্রাণ মানুষসহ যে কোনও বেসামরিকের ওপর হামলা সম্পূর্ণভাবে ক্ষমার অযোগ্য ও অন্যায্য।

মন্তব্যসমূহ