হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

মুসলিম গণহত্যার ২৫তম বার্ষিকী পালিত হলো বসনিয়ায়



মুসলমানদের ওপর বর্বর সার্ব বাহিনীর ভয়াবহ গণহত্যার ২৫তম বার্ষিকী পালিত হলো। বসনিয়া হার্জেগোভিনার সেব্রেনিৎসায় এ গণহত্যার ঘটনা ঘটে।

আলজাজিরা জানায়, স্থানীয় পোটোচারি কবরস্থান ও সেব্রেনিৎসা মেমোরিয়াল সেন্টারে এ উপলক্ষে শনিবার আয়োজিত শোকানুষ্ঠানে দেশটির রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও সামরিক ব্যক্তিত্ব, বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, জাতিসংঘ প্রতিনিধিসহ নিহতদের পরিবারবর্গসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

সার্বীয় বাহিনী ১৯৯৫ সালের ১১ জুলাই বসনিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সেব্রেনিৎসা এলাকা দখল করে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষিত হওয়া সত্ত্বেও এবং জাতিসংঘের ডাচ শান্তিরক্ষীদের উপস্থিতিতেই সেব্রেনিৎসায় চালানো হয় নারকীয় গণহত্যা ও জাতিগত শুদ্ধি অভিযান।

বসনিয়ার সার্ব জেনারেল রাতকো ম্লাডিক গণহত্যার সময় এক টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, শহরটি আমরা সার্বিয়ার জনগণকে উপহার হিসেবে দিয়েছি।

দিনটি উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস এক বলেছেন, সেব্রেনিৎসা গণহত্যা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ইউরোপের মাটিতে সবচেয়ে নৃশংসতম অপরাধ।

সেব্রেনিৎসা দখলের প্রথমদিন থেকেই সার্বীয় বাহিনী স্থানীয় বসনীয় জনগোষ্ঠীর সব পুরুষকে আলাদা করে নেয়। পরে তাদেরকে গণহারে হত্যা করে। ১১ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সেব্রেনিৎসার কোথাও না কোথাও এই গণহারে হত্যার ঘটনা ঘটতেই থাকে। হত্যার শিকার ব্যক্তিদেরকে মৃত্যুর আগে নিজেদের কবর খনন করতে সার্বীয় বাহিনী বাধ্য করে।



সার্ব বাহিনী সেখানে জাতিসংঘের ডাচ শান্তিরক্ষীদের সামনেই ৮ হাজার ৩৭২ জন বসনিয় মুসলমানকে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়। এই গণহত্যা চলার সময় জাতিসংঘ নীরবতা পালন করলেও পরে একে ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযান’ বলে স্বীকৃতি দেয়।

বসনিয়া ১৯৯২ সালের মার্চ মাসে সাবেক ইউগোস্লাভিয়া থেকে গণভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। আর ওই স্বাধীনতা বানচাল করতেই সার্বরা বসনিয়ার মুসলমানদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে।

১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বসনিয়ায় সার্ব বাহিনীর হামলায় দুই লাখের বেশি বসনিয় মুসলমান নিহত ও প্রায় বিশ লাখ শরণার্থী হয়। তবে সেব্রেনিৎসার গণহত্যাকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে নৃশংস ও ভয়াবহ গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করা হয়।

মন্তব্যসমূহ