জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের ছয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না। শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’ দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ...

সোলেইমানি হত্যার শেষ মুহূর্তের ‘নাটকীয়’ বর্ণনা দিলেন ট্রাম্প



ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনায় শেষ মুহূর্তের নাটকীয় বর্ণনা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিজের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন।

সম্প্রতি রিপাবলিকান দাতাদের একটি সভায় ট্রাম্প বলেন, ‘ওই ইরানি জেনারেল যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছিলেন।’

স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের একটি রিসোর্টে রিপাবলিকান দাতারা জড়ো হয়েছিলেন। ২০২০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা এবং রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির জন্য ১০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছেন ওই রিপাবলিকান দাতারা।

সেখানে ইরানি জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার প্রসঙ্গ তুলে আনেন ট্রাম্প। তিনি জানান, হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করার কারণেই সোলেইমানিকে হত্যার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

এর আগেও সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন ট্রাম্প। সে সময় এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা সোলেইমানিকে হত্যা করেছি। সব দিক থেকেই তিনি ছিলেন বিশ্বের শীর্ষ সন্ত্রাসী। এই ব্যক্তি অনেক মার্কিন নাগরিককে হত্যা করেছেন। এবার আমরা তাকে হত্যা করলাম।’

জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে। ফ্লোরিডার ওই সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘এ ধরনের বাজে কথা আমাদের আর কত শুনতে হবে?’

ওই সভায় কোনো সাংবাদিককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে সিএনএন জানিয়েছে, তারা একটি অডিও হাতে পেয়েছিল। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসও কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এর আগে হোয়াইট হাউস অভিযোগ করেছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং এর নাগরিকদের জন্য আসন্ন হুমকি হয়ে উঠেছিল ইরান। চারটি দূতাবাসে হামলার আশঙ্কা ছিল।

ফ্লোরিডার পাম বীচের মার এ লাগো ক্লাবে সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ট্রাম্প এমন নাটকীয়ভাবে বর্ণনা করছিলেন যেন সোলেইমানিকে যখন হত্যা করা হয়েছে তখন তিনি হোয়াইট হাউসে বসেই পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছিলেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘সেনা কর্মকর্তারা তাকে বলেছিলেন, স্যার তারা একসঙ্গে। তাদের হাতে আর সময় আছে দুই মিনিট ১১ সেকেন্ড। স্যার তারা গাড়িতে, তাদের গাড়িটি অস্ত্রে সজ্জিত। তাদের হাতে আর এক মিনিট সময় আছে। একেবারে শেষ মুহূর্তে কর্মকর্তারা বলেন, আর মাত্র ৩০ সেকেন্ড। ১০, ৯, ৮...। এরপর হঠাৎ বিকট শব্দ হয় এবং সবকিছু শেষ।’

ট্রাম্প এভাবেই ওই ড্রোন হামলার বর্ণনা দিয়েছেন। তবে তার এই বর্ণনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক আইন প্রণেতাই সমালোচনা করেছেন। কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা তার কোনো উপদেষ্টাই সেখানে উল্লেখ করেননি যে সোলেইমানি আমেরিকার জন্য হুমকি ছিলেন।

সিএনএন বলছে, ওই অডিওতে সোলেইমানি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি এমন কথার পুণরাবৃত্তি করেননি ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছেন যে, হামলার আগে সোলেইমানি যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে খারাপ কথা বলেছেন। যার কারণে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ