মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে সে দেশের যে সব নাগরিক নানা ধরনের ‘ঝুঁকি’ সৃষ্টি করছে তাদের চিহ্নিত করতে কমিটি গঠিত হয়েছে।
জেলা-উপজেলা-পৌরসভা, এমন কী ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায়েও বেশ কয়েকটি কমিটি কাজ শুরু করছে।
বাংলাদেশ সরকার বলছে, মায়ানমারের এই সব নাগরিক শরণার্থী শিবির থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যাচ্ছে এবং তারা আইন-শৃঙ্খলাজনিত বা স্বাস্থ্যগত নানা ঝুঁকি তৈরি করছে।
মায়ানমারের এই সব নাগরিক, যারা প্রায় সবাই রোহিঙ্গা মুসলিম, তাদের মাধ্যমে সংক্রামক ব্যধির বিস্তার ঘটছে বলেও সরকারি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, মায়ানমারের অগণিত নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশে করেছে ও তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আর সেই পরিস্থিতির মোকাবিলাতেই সরকার অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মায়ানমার নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ কমিটি নামে বিভিন্ন পর্যায়ে অনেকগুলো কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ৫ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে চট্রগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি এবং কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসকদের নেতৃত্বে একটি করে এই ধরনের কমিটি গঠিত হবে।
এছাড়া ওই তিনটি জেলার সংশ্লিষ্ট উপজেলা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়েও একটি করে কমিটি ও বাকি জেলাগুলোতে সীমিত আকারে একই ধরনের কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে আরো জানানো হয়েছে, এই সব কমিটির প্রধান কাজ হবে সর্বস্তরের জনগণ ও গোয়েন্দাদের সাহায্য নিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মায়ানমার নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ ও তাদের ক্যাম্প এলাকায় পুশের ব্যবস্থা করা।
এছাড়া কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার নয়াপাড়া, লেদা, কুতুপালংয়ের মতো শরণার্থী শিবিরগুলো থেকে পালিয়ে এই রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যেতে না-পারে এই কমিটিগুলো তার জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু এলাকাতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে সে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী নির্যাতন চালানোর জেরে প্রায় ৬৫ হাজার রাখাইন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে বলে বাংলাদেশ সরকার জানাচ্ছে।
তবে এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে ঢোকার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার প্রবল বাধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
এখন এই ধরনের কমিটি গড়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ স্পষ্ট করে দিল, শরণার্থী রোহিঙ্গারা যদি তাদের ক্যাম্প বা শিবিরের বাইরে গিয়ে মূল সমাজে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করে সরকার তা বরদাস্ত করবে না।
সূত্র: বিবিসি
মন্তব্যসমূহ