জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের ছয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না। শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’ দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ...

গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৪৮

 



যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে ইসরায়েলের তিনটি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এই তথ্য দিয়েছে। খবর আল-জাজিরার।


ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার কেন্দ্রস্থলের নুসেইরাত এলাকায় জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে ২৫ জন নিহত হয়। এ ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে ১৮ জন এবং গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইট লাহিয়া এলাকায় পাঁচজন নিহত হয়েছে।


জাতিসংঘ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় দেইর এল-বালাহ এলাকায় তাদের মানবিক সাহায্য পরিচালনাকারী কেন্দ্রে আক্রান্ত হয়েছে। গত ৯ মাসের যুদ্ধে ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত স্কুলগুলোর ৭০ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এসব হামলায় সেখানে আশ্রয় নেওয়া ৫৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।


গাজা উপত্যকার দক্ষিণে রাফাহ শহরে ফিলিস্তিনি যোদ্ধা ও ইসরায়েলি সৈন্যদের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ চলছে। আল-জাজিরার কাছে আসা বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একজন হামাস যোদ্ধা মাটির নিচে তার অবস্থান থেকে উঠে এসে ট্যাংক বিধ্বংসী রকেটের সাহায্যে একটি ইসরায়েলি ট্যাংকের ওপর হামলা করছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে একজন যোদ্ধা তার ট্যাংক বিধ্বংসী রকেট নিয়ে একটি আর্মার্ড বুলডোজারের দিকে লক্ষ্য স্থির করছে। অন্য একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, একটি ভবনে অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সৈন্যরা হামলার শিকার হয়েছেন এবং তাদের চারপাশে আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে।


এদিকে গাজায় সাত লাখেরও বেশি মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংকটে পড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। উপত্যকাটির দেইর এল-বালাহ শহরের বর্জ্য পানি পাম্প করার স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। তারা জানান, জ্বালানি তেলের সরবরাহের অভাবে এসব পাম্প স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে। ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি সারা শহরে ছড়িয়ে পড়ছে। এর পাশাপাশি বাড়ছে রোগবালাই।


গাজার সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর অবরোধের কারণে তেল সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য, সুপেয় পানি, ওষুধসহ মানবিক সাহায্য পণ্য সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে।


গাজা উপত্যকায় গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে চলতে থাকা হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৭১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিরীহ শিশু ও নারী। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও ৮৯ হাজার ১৬৬ জন।

মন্তব্যসমূহ