শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষের পরের বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা সরে যাওয়ায় এখন থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীরা সরে যাওয়ায় ক্যাম্পাস ভেতর ও রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে ছোট ছোট যান চলাচল করতে দেখা গেছে।
সোমবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। কোথাও নেই শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। নেই বিক্ষোভ মিছিল বা আন্দোলন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে লাইব্রেরির সামনে কিছু শিক্ষার্থীরা বসলেও পরে তারা আবার উঠে যায়। মহাসড়কে অটোরিকশাসহ ছোট ছোট যানবাহনও চলাচল করছে। বাস-ট্রাকের মতো বড় যানবাহন রাজশাহী বাইপাস সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। যান চলাচল বিঘ্নতা এড়াতে বিনোদপুর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুরো ক্যাম্পাস নজরে রাখছে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
জানা গেছে, এর আগে রোববার (১২ মার্চ) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ-সংলগ্ন রেললাইনে আগুন জালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছিল শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী রেল স্টেশনের সাথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছাড়া বাকি সব জেলার রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল প্রায় চার ঘণ্টা। পরে রাত ২টায় রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।
রোববার রাত ৮টায় সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ শিক্ষার্থী। তার মধ্যে চারজন নারী শিক্ষার্থীও ছিল। পরে প্রশাসন এসে তাদের সাথে কথা বললে অনশন স্থগিত করে তারা। এর আগে, দুপুর ১২টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অগ্নিসংযোগ, ইট ও গাছের গুঁড়ি রেখে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে সরে চারুকলা অনুষদ-সংলগ্ন রেললাইনে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা ব্যানার, টায়ার, পাখির অবয়ব (ডামি) পুড়িয়ে দেয়।
শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক বন্ধ থাকার ফলে বন্ধ ছিল যান চলাচল। তবে বিকল্প পথে চালু আছে যান চলাচল। নাটোরের দিক থেকে আসা যানবাহন শহরে বুধপাড়া ফ্লাইওভার হয়ে প্রবেশ করেছে। আর বাজারের দিক থেকে কাটাখালীর দিকে আসা ছোট যানবাহন ফুলতলা বালুরঘাট হয় যাচ্ছে। এছাড়া বাসগুলো সিরইল বাস স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে ভদ্রামোড় দিয়ে নতুন বাইপাস হয় নাটোরের দিকে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বগুড়া থেকে রাজশাহী আসার সময় বাসের আসনে বসাকে কেন্দ্র করে রাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশে সাথে তর্ক হয় বাসের চালক শরিফুল ও চালকের সহকারী রিপনের। বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকে পৌঁছালে রিপনের সাথে ওই শিক্ষার্থীর আবার বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় স্থানীয় এক দোকানদার এসে ওই শিক্ষার্থীর সাথে তর্কে জড়ান, তখন উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে ওই দোকানদারের ওপর চড়াও হলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এক জোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তখন শিক্ষার্থীরাও তাদের পাল্টা ধাওয়া করে।
মন্তব্যসমূহ