তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রাণঘাতি ভূমিকম্প আঘাত হানার পাঁচ দিন পর গতকাল শনিবারও উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষকে বের করে আসছেন, তবে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবন্ত আরও মানুষ পাওয়ার আশা কমে আসছে।
সোমবারের সাত দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি ছিল ১৯৩৯ সালের পর তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ আর এতে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। তুরস্কে মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে আর সিরিয়ায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ মারা গেছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। খবর আলজাজিরার।
তুরস্কের হাতায়া প্রদেশের রাজধানী আন্তাকিয়া থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক বার্নার্ড স্মিথ জানান, ‘ভূমিকম্পের ১৩৫ ঘণ্টার মাথায় এখনও কিছু আশা আছে। ১৩২তম ঘণ্টার মাথায় একটি বাচ্চাকে উদ্ধার করা হয়, আর এর দুই ঘণ্টা আগে একজন নারী ও পুরুষকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে, বেঁচে যাওয়াদের উদ্ধারে এখনও তল্লাশি চলছে।’
স্মিথ জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই এলাকার এয়ারপোর্টটি পুনরায় খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
এদিকে, আন্তাকিয়ার স্বেচ্ছাসেবীরা সেখানে তাদের তৎপরতার সময় লুটতরাজের অভিযোগ এনেছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইফ এরদোয়ান লুটেরাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
ভূমিকম্পকবলিত এলাকা সফরের সময় এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছি। এর অর্থ হলো, যেসব লোক লুটতরাজ ও অপহরণে জড়িত, তাদের বুঝতে হবে যে রাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে।’
তুরস্কে এ পর্যন্ত ৪৮ জন লুটেরাকে গ্রেপ্তার করেছে কর্তৃপক্ষ, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ তথ্য জানায়। লুটতরাজে অংশ নেওয়া ওই লোকজনকে তদন্তের পর আটটি আলাদা প্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অন্যদিকে, জাতিসংঘ জানিয়েছে সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া নয় লাখ লোকের জন্য জরুরি ভিত্তিতে গরম খাবার প্রয়োজন।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত এসব এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। দামেস্কের প্রতিশ্রুতির পরও খুব অল্প পরিমাণ সাহায্য সামগ্রী সেখানে পৌঁছেছে। তুরস্ক জানিয়েছে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় সাহায্য পাঠানোর সুবিধার্থে তারা সীমান্তে আরও দুটি নতুন রুট খুলে দেবে।
মন্তব্যসমূহ