জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের ছয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না। শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’ দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ...

আফগানিস্তানে মুখ ঢাকতে বাধ্য হলেন উপস্থাপিকারা

 




তালেবান সরকারের আদেশ জারির পর বাধ্য হয়ে মুখ ঢেকে খবর পড়া শুরু করেছেন আফগানিস্তানের নারী উপস্থাপিকারা। গতকাল রোববার থেকে দেশটির শীর্ষস্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এর আগে দেশটির তালেবান সরকার মুখ ঢেকে পর্দায় হাজিরের নিয়ম জারি করে।


কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মটি কার্যকরের ঘোষণা আসে। সে সময় হাতে গোনা কয়েকটি গণমাধ্যম আদেশটি কার্যকর করে। কিন্তু রোববার আফগানিস্তানের প্রায় সব নারী টিভি উপস্থাপক মুখ ঢেকে টেলিভিশনের পর্দায় আসেন। কারণ তালেবানের ভাইস অ্যান্ড ভার্চু মন্ত্রণালয় আদেশটি এরই মধ্যে কঠোরভাবে কার্যকর করা শুরু করেছে।


এর আগে তালেবানের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে, নীতিটি চূড়ান্ত এবং এ বিষয়ের ওপর কোনো আলোচনা হবে না।


চলতি মাসের শুরুর দিকে আফগানিস্তানের প্রধান ধর্মীয় নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা একটি আদেশ জারি করেন। এতে বলা হয়, আফগান নারীদের মুখসহ পুরো শরীর ঢেকে জনসম্মুখে বের হতে হবে। আর এ পোশাক হবে আফগানিস্তানের প্রথাগত বোরকার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।


উপস্থাপিকাদের জন্য হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার এই আদেশ শনিবার থেকে কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছিল দেশটির নীতিনৈতিকতা-বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কিন্তু ওইদিন উপস্থাপিকারা এই আদেশ মানেননি। তারা খোলা মুখেই উপস্থাপনা করেছেন। কিন্তু এর একদিন পর থেকেই তারা ওই আদেশ মানতে বাধ্য হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।


খবরে আরও বলা হয়েছে, রোববার সকালে সংবাদ বুলেটিন পড়ার সময় থেকে উপস্থাপিকারা মুখ ঢাকতে শুরু করেন। আফগানিস্তানের শীর্ষস্থানীয় টিভি চ্যানেল টোলোনিউজ, আরিয়ানা টেলিভিশন, শামশাদ টিভি ও ওয়ানটিভির খবরে উপস্থাপিকাদের মুখ ঢাকা ছিল।


টোলোনিউজের উপস্থাপিকা সোনিয়া নিয়াজি বলেন, ‘আমরা প্রতিরোধ করেছি। আমরা মুখ ঢাকার বিরোধিতা করে ছিলাম। কিন্তু টিভি কর্তৃপক্ষ উপস্থাপিকাদের খোলা মুখে স্ক্রিনের সামনে না আসতে চাপ দিয়েছে। নির্দেশ না মানলে ওই উপস্থাপিকাকে অন্য কাজে বদলি অথবা চাকরিচ্যুত করার কথা বলা হয়েছে। ফলে আমরা মুখ ঢাকতে বাধ্য হয়েছি।’


উল্লেখ্য, গত বছর আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর তালেবান প্রশাসন নারীদের জীবন একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় বেঁধে ফেলছে। ওই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন টেলিভিশনের পর্দাতেও নারীদের মুখ ঢেকে হাজির হওয়ার নির্দেশ।

মন্তব্যসমূহ