শুক্রবার ক্লাসের সিদ্ধান্ত হয়নি, ভুলবশত ফেসবুকে পোস্ট হয়েছিল

শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বরাতে যে বক্তব্যটি শিক্ষামন্ত্রণালয় তাদের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট দিয়েছিল তা ভুলবশত বলে জানিয়েছে তারা। অপর এক পোস্টে আজ রোববার (৫ মে) বিকেলে ৪টার দিকে এই তথ্য জানায় তারা। এই পোস্টে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে,  শুক্রবারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ফেসবুক পেজ থেকে আগের পোস্টটি সরিয়ে নতুন পোস্টে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে ‘শুক্রবার শিক্ষা খোলার বিষয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড পেজে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে দেওয়া তথ্য ভুলবশত পোস্ট করা হয়েছে। এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত শনিবারের পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’  এর আগে একই পেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের এখন বছরে স্কুলের মোট কর্মদিবস ১৮৫টি। এর মধ্যে ২০ দিন নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নের জন্য রাখা হয়েছে। স্কুলের কর্মদিবস যদি আরও কমে যায়, শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে।’

গুগল ম্যাপে গাজার স্যাটেলাইট ছবি ঝাপসা কেন?

 




বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাকে গুগল ম্যাপে ঝাপসা করে রাখা হয়েছে। 


গাজার ওপর সাম্প্রতিক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই অঞ্চল নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিষয়টির প্রতি আবারও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন গবেষকরা। 


বিবিসি জানিয়েছে, ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলের অধিকাংশ জায়গাই গুগল আর্থে ঝাপসা করে রাখা। সেখানে স্যাটেলাইটে তোলা কম-রেজল্যুশনের ছবিই দেয়া রয়েছে। কিন্তু স্যাটেলাইট কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে এর চেয়ে আরও অনেক হাই-রেজল্যুশনের ছবি পাওয়া যায়।


গুগল ম্যাপসের স্যাটেলাইট ছবিতে গাজার রাস্তায় গাড়ি শনাক্ত করতে পারাই দায়। অথচ উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের মতো গোপনীয়তা রক্ষা করে চলা শহরের রাস্তায় গাড়ি তো বটেই, এমনকি প্রতিটি মানুষ পরিষ্কার দেখা যায়।


যুদ্ধের প্রতিবেদন তৈরিতে স্যাটেলাইটের ছবি এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ছবি ব্যবহার করে সাম্প্রতিক যুদ্ধে গাজা এবং ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে চেয়েছিলেন অনুসন্ধানী প্রতিবেদকেরা। তবে গুগল আর্থের মতো সর্বাধিক ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্মেও গাজার স্যাটেলাইট ছবি ঝাপসা এবং নিম্নমানের দেখায়।


ব্রিটিশ অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম বেলিংক্যাটের সংবাদকর্মী অ্যারিক টলার টুইটারে লিখেছেন, গুগল আর্থের সর্বশেষ ছবি ২০১৬ সালের, সেগুলো একদম বাজে মানের। সিরিয়ার বেশ কিছু গ্রামীণ অঞ্চল জুম করে দেখছি, অথচ ওই ছবিগুলো যখন তোলা হয়, তারপর অন্তত ২০ বার উচ্চ রেজল্যুশনের স্যাটেলাইট ছবি তোলা হয়েছে।


গুগল বলছে, তারা খুব ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর বেলায় নিয়মিতভাবেই নতুন ছবি যোগ করার চেষ্টা করে। কিন্তু গাজার বেলায় সেটা মোটেই করা হয়নি।


অবশ্য ফিলিস্তিনের প্রতি গুগলের এই বৈরী আচরণ নতুন নয়। ফিলিস্তিনকে অপছন্দের প্রবণতাটি গুগলের পুরনো অভ্যাস বলে জানিয়েছে খলিজ অনলাইন।


জানা যায়, ২০১৬ সালে কোম্পানিটির আরেক বিশেষ পরিষেবা ‘গুগল ম্যাপ’ থেকে ফিলিস্তিনের নাম মুছে ফেলে সেই সময়কার ফিলিস্তিনের সমস্ত ভূখণ্ড ইসরাইলের অংশ হিসেবে দেখানো হয়।


এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী গুগলকে নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হলে গুগল তাদের মানচিত্র সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছিল।


মধ্যপ্রাচ্যের বিশ্লেষকদের মতে, গুগল ম্যাপ আজও সংশোধন করা হয়নি; ফিলিস্তিন ও অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের সমগ্র ভূখণ্ডকেই ইসরাইল হিসেবে চিহ্নিত করে রেখেছে গুগল কর্তৃপক্ষ।


এ বিষয়ে গুগল ও অ্যাপলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিষ্ঠান দুটির মানচিত্র সেবায় স্যাটেলাইট ছবি দেখানো হয়।


অ্যাপল জানিয়েছে, তারা শিগগিরই উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি দেখানোর জন্য কাজ শুরু করেছে। আর গুগল বলেছে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তারা স্যাটেলাইট ছবি কিনে থাকে। উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি পেলে তারা হালনাগাদ করার কথা ভাববে। তবে বলেছে, ঠিক এই মুহূর্তে তেমন কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।


গুগলের জনপ্রিয় ‘ট্রান্সলেট’ বা অনুবাদ পরিষেবায় পূন্যময়ী নগরী ‘জেরুজালেম’-এর ভাষান্তরের সময় কোম্পানীটির ইসরাইলপ্রীতির সূক্ষ্ম রহস্য বেরিয়ে আসে।  বিশ্বের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ভাষায় জেরুজালেম নগরী ‘জেরুজালেম’নামে পরিচিত হলেও এর প্রাচীন আরবি নাম ‘আল কুদস’।


ইতিপূর্বে যেকোনো ভাষা থেকে গুগল ট্রান্সলেটে ‘জেরুজালেম’ শব্দটির আরবি অনুবাদ করলে তা ‘আল কুদস’ ভাষান্তর হতো।


গতবছরের ২৮ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি ঘোষণার পর থেকে গুগল ট্রান্সলেট এখন আর জেরুজালেমের অনুবাদ আল কুদস করছে না।


ফিলিস্তিনি জনগণ ও আরব মুসলমানদের বহু চর্চিত প্রাচীন এই আরবি শব্দটিকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলিদের উচ্চারিত ‘জেরুজালেম’ শব্দকেই পবিত্র এই নগরীর নতুন আরবি নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে গুগল, যা পরোক্ষভাবে জনপ্রিয় এই প্রতিষ্ঠানটির ইসরাইলের প্রতি পক্ষপাতিত্বের সুপরিকল্পিত একটি উদাহরণ।


ব্যাপকভাবে অভিযোগ আসার পর সূক্ষ্ম এই ব্যাপারটি আরও স্পষ্ট করতে আরবি গণমাধ্যম আল খালিজের কয়েকজন সাংবাদিক এ বিষয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন।


প্রথমে তারা আরবি يا قدس (হে কুদস) এর তুর্কি অনুবাদ চাইলে গুগল তা 'Ah Yeruşalim' এ ভাষান্তর করেছে। يا قدس এর ইংরেজি অনুবাদ করেছে 'Oh Jerusalem', ফরাসি ভাষায় 'Oh Jérusalem'।


এভাবে আরও কয়েকটি ভাষায় তারা يا قدس এর অনুবাদ করে দেখেছে। কিন্তু যখনই তারা এ ভাষাগুলো থেকে সেসব ভাষার বর্ণরীতি অনুযায়ী ‘জেরুজালেম’শব্দের আরবি অনুবাদ করেছেন তখন তারা গুগলের অতিসূক্ষ্ণ এই স্বজনপ্রীতি ধরতে সক্ষম হয়েছেন। 


এসব ভাষায় গুগল ট্রান্সলেট ‘হে জেরুজালেম’ এর আরবি অনুবাদ করেছে يا أورشليم'।


অর্থাৎ জেরুজালেমের আরবি নাম আর আল কুদস থাকছে না। খুব শিগগির এই নগরীকে আরবিতেও ‘জেরুজালেম’ প্রতিষ্ঠিত করছে তারা।

মন্তব্যসমূহ