১৯৪৭-এ কাশ্মীরের নিরীহ মুসলিমদের ওপর গণহত্যায় চালিয়েছিল ভারতীয় বাহিনী। বর্বর সেই হামলায় ২ লাখ ৫০ হাজার মুসলিম নিহত হন বলে দাবি করেন পাকিস্তান শাসিত আজাদ কাশ্মীরের প্রেসিডেন্ট সরদার মাসুদ খান। তুর্কি গণমাধ্যম আনোদুলি এজেন্সিকে দেয়া বক্তব্যে কাশ্মীর ইস্যুতে নানা দিক তুলে ধরেন তিনি।
খান বলেন, গত ৭৩ বছরে ভারতীয় সেনা কর্তৃক হত্যা, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, চোখ তুলে ফেলাসহ অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কাশ্মীরের অর্ধ লাখ মুসলমান।
১৯৪৭ সালের ২৭ অক্টোবরে ভারত কাশ্মীরের প্রবেশ করে বলে জানান তিনি। সেসময় পাকিস্তানের পাশতুন উপজাতীয় বাহিনীগুলোর আক্রমণের মুখে হরি সিং ভারতে যোগ দেবার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন, এবং ভারতের সামরিক সহায়তা পান। পরিণামে ১৯৪৭ সালেই শুরু হয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ - যা চলে প্রায় দু'বছর।
ভারতীয় বাহিনী জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে পা রাখার পর থেকে ২৭ অক্টোবরের দিনটি পাকিস্তান শাসিত আজাদ কাশ্মীরে 'কালো দিন' পালন করে আসছে। গেল বছর জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা '৩৭০ ধারা' রদ করে ভারত কেন্দ্রশাসিত সরকারের অধীনে চলে যায়। ওই ঘটনায় প্রতিবাদ জানালে বহু কাশ্মীরি নির্যাতনের শিকার হন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আনাদোলু সাংবাদিক জানতে চান, ২৭ অক্টোবর জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ তাৎপর্য কী?
জবাবে সরদার মাসুদ খান বলেন, ২৭ অক্টোবর পাকিস্তানের জনগণ এবং কাশ্মীরিদের জন্য 'কালো দিন'। ১৯৪৭ সালের এই দিনে জম্মু-কাশ্মীরের ভয়াবহ আক্রমণ করেছিল ভারত। একই সঙ্গে রাজ্যের বড় একটি অংশ দখল করে নেয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি।
তখন সেনা মোতায়নের পরই কাশ্মীরের জনগণের ওপর বর্বর হামলা, গণহত্যা এবং মুসলিমবিরোধী মিথ্যা প্রচারণা চালায় ভারত। সেসময় ২ লাখ ৫০ হাজার মুসলমান হত্যা করে ভারতীয় বাহিনী। নির্যাতনের মুখে বহু কাশ্মীরি বাস্তুচ্যুত হন। একই সঙ্গে অনেককে পাকিস্তানে পুশ করা হয় বলেও দাবি করেন আজাদ কাশ্মীরের এই প্রেসিডেন্ট। বলেন, মূলত ২৭ অক্টোবর থেকেই কাশ্মীদের ওপর গণহত্যার অভিযানে নামে ভারত।
কাশ্মীরের জনগণ প্রথমে ডোগরা রাজবংশের স্বৈরাচারী শাসন থেকে এবং তারপরে ভারতীয় দখল থেকে স্বাধীনতা অর্জনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা করেছিল। বলেন '১৯৪৭ এ কাশ্মীরের জনপ্রিয় নেতা শেখ আবদুল্লাহ ভারতে যোগ না দিতেন, আমরা কাশ্মীরিদের কয়েক দশক ধরে চলমান গণহত্যার হাত থেকে বাঁচাতে পারতাম।’ ওই এক ভুল কাশ্মীরিদের অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয় বলে মনে করেন তিনি।
তবে কাশ্মীরের অধিকার আদায়ে বিশ্ব এখন সোচ্চার বলেন জানান প্রেসিডেন্ট সরদার। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। কাশ্মীরিদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তান সব সময় পাশে আছেন বলেও জানান তিনি।
মন্তব্যসমূহ