হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

মানচিত্র থেকে বাদ দেওয়া হলো আগুনে পোড়া রোহিঙ্গা গ্রাম

 

গুগল ম্যাপে কান কিয়া গ্রামের অস্তিত্ব নেই- রয়টার্স






মিয়ানমারে আগুনে পোড়া রোহিঙ্গা গ্রাম মানচিত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে তিন বছর পূর্বে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের গ্রাম ‘কান কিয়া’ আগুনে জ্বালিয়ে দেয় দেশটির সেনাবাহিনী। বুলডোজার দিয়ে পুরো গ্রাম মাটিতে মিশিয়েও দেওয়া হয়। এবার সেসব ধ্বংসের চিহ্ন না রাখতে মানচিত্র থেকে গ্রামকেও মুছে দেয় মিয়ানমার সরকার। 


সন্ত্রাস দমনের নামে চলা ঐ অভিযানকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধন’ বলে অভিহিত করেছে। খবর রয়টার্স’র। 


গেল বছর মিয়ানমার সরকার যে নতুন মানচিত্র তৈরীর পর জাতিসংঘে জমা দেয় তাতে কান কিয়া গ্রামের কোন অস্তিত্বই নেই বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। কেন জাতিসংঘ মিয়ানমারকে এভাবে রোহিঙ্গাদের অস্তিত্বের চিহ্ন মুছে ফেলা থেকে দেশটির কর্তৃপক্ষকে আটকাচ্ছে না তা জানতে সংস্থাটির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।


জানা যায়, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্ত নদী নাফ নদী থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কান কিয়া গ্রামে সহস্রাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম বাস করতেন। ২০১৭ সালে পুরো রাখাইন জুড়ে রোহিঙ্গা নিধনের ধ্বংসযজ্ঞ চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এ সময় ঐ গ্রামকে আগুনে পোড়ানো হয়। চালানো হয় বুলডোজারের তান্ডব। সে সময় প্রাণে বাঁচতে গ্রামের হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। গ্রামটিতে এখন দেশটির সামরিক ও সরকাররি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পুলিশের নজরদারির জন্য দেওয়া হয়েছে কাঁটা তারের বেড়া। এমনটি দেখা যায় ‘গুগল আর্থ’ ম্যাপে। রয়টার্স এমন কিছু ছবি প্রকাশও করেছে। মিয়ানমারে জাতিসংঘের ‘ম্যাপিং ইউনিট’ ২০২০ সালে দেশটির নতুন ম্যাপ বানিয়েছে। মিয়ানমারের সরকারি মানচিত্রের ভিত্তিতে জাতিসংঘের ‘ম্যাপিং ইউনিট’ নিজেদের ম্যাপ তৈরি করে। জাতিসংঘের অধীনে নানা সংস্থা ওই ম্যাপ ব্যবহার করে। দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে ঐ জায়গাটিকে নিকটবর্তী মংডু শহরের অন্তর্ভূক্ত বলে বর্ণনা করা হয়েছে। 


রাখাইন রাজ্যে কান কিয়া গ্রামের মত অন্তত চার শত গ্রামকে ধ্বংস করা হয়েছে। এমনটি বলছে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’। সংস্থাটি ভূ-উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে।


কান কিয়া গ্রামের গ্রাম প্রধান মোহাম্মদ রফিক। তিনি এখন বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। তিনি বলছেন, তারা আমাদের এমনভাবে নির্যাতন করেছে যে, তারা চায় আমরা যেন সেখানে আর ফিরে না যাই।


মিয়ানমারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় রাখাইন রাজ্যের পুনঃগঠনের কাজ দেখভাল করছে। রয়টার্স থেকে তাদের কাছে গ্রামের নাম মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার কারণ এবং কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনা হবে তা জানতে চাওয়া হলে তারা এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।


উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মাঝামাঝিতে রাখাইন রাজ্যে সন্ত্রাস দমনের নামে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের সেনাদের বিরদ্ধে ‘গণহত্যার’ অভিযোগে শুনানি চলছে।

মন্তব্যসমূহ