গাজার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭৩

  যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার উত্তরে বেইত লাহিয়ার একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর  হামলায় কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি এই তথ্য দিয়েছে। তবে ইসরায়েল বলেছে, গাজার একটি ‘সন্ত্রাসী’ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। খবর এএফপির। সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘গাজার উত্তরে বেইত লাহিয়ার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলার পর আমাদের এজেন্সির কর্মীরা ৭৩ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অনেকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও বেশ কয়েকজন শহীদের মরদেহ রয়ে গেছে।’ মাহমুদ বাসাল জানান, শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিনের শেষ ভাগে ইসরায়েলের চালানো ওই হামলায় বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু রয়েছে। হামলাটি চালানো হয় একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ইসরায়েলের সামরিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রতিরক্ষা বিভাগের (আইডিএফ) কাছে আসা তথ্যের সঙ্গে হতাহতের সংখ্যার মিল নেই। তবে, এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত বিবরণও তারা দেয়নি বা কাদের লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছ

ফিলিস্তিনি বৃদ্ধের ওপর ইসরাইলি বর্বরতা: সমালোচনার ঝড়

 




পশ্চিম তীরে ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন ৬৫ বছর বয়সী খায়রি হাননাউন। প্রতিবাদ চলাকালে তাকে আটক করে ইসরাইলি দখলদার বাহিনী। পরে নিরস্ত্র এ বৃদ্ধের ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে ইসরাইলি সেনা। বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।


ওয়াফা নিউজকে তিনি জানান, পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকার ০ দশমিক ৮ বর্গমাইল ভূমি দখল করার পরিকল্পনা করছে ইসরাইল। সেখানে তারা অবৈধভাবে শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেদিন তিনি তেল আবিবের অবৈধ পরিকল্পনার প্রতিবাদ করছিলন খায়রি।


স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, বিক্ষোভে গুলি ছুঁড়ার পাশাপাশি ব্যাপকহারে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ইসরাইলি বাহিনী। অর্ধশত আন্দোলকারী এখন শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। ওয়াফা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রতিবাদকারীসহ গণমাধ্যম কর্মীরাও এদিন ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছেন।


ফিলিস্তিনি এবং ইসরাইলি মানবাধিকারকর্মীরা প্রায়ই ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের উপর বল প্রয়োগের অভিযোগ তুলছেন।


প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ৫ সন্তানের জনক ৬৫ বছর বয়সী খায়রিকে মাটিতে ফেলে দেয় দখলদার বাহিনী। পরে তার ঘাড়ে হাঁটু চেপে ধরে রাখে এবং জোর করে তাকে হাতকড়া পরায়।


ইসরাইলি বাহিনীর এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা। একে যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাওয়া জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনার সঙ্গে তুলনা করেছেন।


নিরস্ত্র ওই কৃষ্ণাঙ্গকে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা ৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে রেখেছিল পরে সে ওই অবস্থায় মারা যায়। ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’ বলার পরও ফ্লয়েডকে ছাড় দেয়নি শ্বেতাঙ্গ ওই পুলিশ।


ইসরাইলি বাহিনী আমার সঙ্গে যা করেছে তা একটা উদাহরণ মাত্র। আমি একজন বয়স্ক মানুষ, তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না। পুরো শক্তি দিয়ে ওই সেনা সদস্য আমাদের ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে রেখেছে।


ওয়াফা নিউজকে খায়রি বলেন, ইসরাইলি সেনা আমাকে আঘাত করেছে। ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে কয়েক মিনিট চেপে ধরে ছিল। পরে অন্যরা এসে আমাকে উদ্ধার করে। আমি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমরা মাথার উপর সারা দুনিয়া ঘুরছিল। তখন আমার মনে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লয়েডের সঙ্গে কি হয়েছিল? যাকে মার্কিন পুলিশ এভাবে হত্যা করে।


সেনাবাহিনী খায়রির সঙ্গে কোনো অন্যায় করেনি বলে জানিয়েছে ইসরাইল। এছাড়া ভবিষ্যতে এ ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানায় দেশটির গণমাধ্যম ইসরাইল টাইমস।

মন্তব্যসমূহ