জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের ছয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না। শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’ দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ...

এবার নোবেল শান্তি পুরস্কারে মনোনয়ন পেলেন নেতানিয়াহু

 




নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পর মনোনয়ন পেলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজিয়ামি নেতানিয়াহু। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইতালির অ্যান্টি-মাইগ্রেন্ট লিগ পার্টির সদস্য পাওলো গ্রিমোলদি এক টুইটে এ তথ্য জানান।


সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্কোন্নয়ন চুক্তি করায় ট্রাম্পকে এ মনোনয়ন দেয়া হয়। একই কারণে নেতানিয়াহুকেও মনোনয়ন দেয়া হলো।


টুইটে গ্রিমোলদি বলেন, ‘এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য নেতানিয়াহুর নাম প্রস্তাব করেছি। সেটি নোবেল কমিটি গ্রহণ করেছে বলে আমি নিশ্চিত হয়েছি।’


জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, ইতালির অ্যান্টি-মাইগ্রেন্ট লিগ পার্টির সদস্য গ্রিমোলদি ইসরায়েলিদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনি বহুবার ইসরায়েল সফরে গিয়েছেন। যদিও নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার কখনও সাক্ষাৎ হয়নি।



গ্রিমোলদি দাবি করেছেন, আমিরাত-বাহরাইনের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি ছাড়াও সৌদি আরবের সঙ্গে বন্ধন সুদৃঢ় করেছেন নেতানিয়াহু। এজন্য শান্তিতে তার নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহু যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের শান্তিচুক্তিতে মধ্যস্থতা করায় গত সপ্তাহে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পান ট্রাম্প। নরওয়ের রাজনীতিবিদ টিব্রিং-জেড্ডে পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব করেন।


দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনে আশ্রয় পাওয়া ইহুদিরা ফিলিস্তিনের মূল ভূমি দখল করে আসছে। তার অবসানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেলফোর চুক্তি হয় ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে। সেই চুক্তির মধ্যস্থতা করে ব্রিটেন ও জাতিসংঘ। ওই চুক্তি অনুযায়ী ফিলিস্তিনের ৫৭ শতাংশ ভূমি দেয়া হয় ইসরাইলকে, ৪২ শতাংশ ফিলিস্তিনকে এবং ১ শতাংশ বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। ওই এক শতাংশ মুসলমান, ইহুদি ও খৃষ্টানদের পবিত্র ভূমি। কিন্তু ইসরাইলের চেয়ে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার পরও ফিলিস্তিনকে কম (৪২ শতাংশ) ভূমি দেয়ায় সে সময় অসন্তোষ দেখা দেয়। ওই চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের আরো ভূমি দখল করতে শুরু করে ইসরাইল। এই দখলদারিত্ব সবচেয়ে বেশি বেগবান করেন বেনজিয়ামিন নেতানিয়াহু।


এসব ঘটনার জেরে আরব দেশগুলো ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এতদিন। একই সাথে ইসরাইলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। কিন্তু এবার ফিলিস্তিনের দখলদারিত্ব বন্ধ করার শর্তে আরব-আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে চুক্তি করলো ইসরাইল। এই চুক্তিতে মধ্যস্থতা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে চুক্তির পরদিন সকাল থেকে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে জোরালোভাবে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। ইসরাইল বেলফোর চুক্তির শর্ত যেমন লঙ্ঘন করে আসছে তেমনি ‘আব্রাহাম’ নামক আমিরাত-ইসরাইল চুক্তির শর্তও তেলআবিব লঙ্ঘন করছে।


তবে, নোবেল পুরস্কারের মনোনয়ন গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট মনোনয়নপত্র রয়েছে। গোটা বিশ্ব থেকে নির্বাচিত ৩০০০ জনকে এই মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়, যাতে তারা তা পূরণ করে পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে পারে। নোবেল শান্তি পুরস্কার নির্বাচনের জন্য এমন সব ব্যক্তিদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, যারা এ বিষয়ে বিশেষ কর্তৃত্বের দাবিদার। যে বছর পুরস্কার প্রদান করা হবে ওই বছরের ৩১ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রদানের শেষ তারিখ।


নোবেল কমিটি তাদের মধ্যে সম্ভাব্য ৩০০ জনকে মনোনীত করে। মনোনীতদের নাম প্রকাশ করা হয় না, এমনকি তাদেরকে জানানোও হয় না যে তারা মনোনীত হয়েছেন। প্রতিবছর বিভিন্ন দেশের আইনপ্রণেতা, সরকারের সদস্য ও শিক্ষাবিদরা নোবেল পুরস্কারের জন্য শত শত ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেন। সাধারণত অক্টোবরে পুরস্কার বিজয়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণা করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। ২০১৯ সালে শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ।


মন্তব্যসমূহ