হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

মানুষের জন্য কিছু করতেই আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছেন: প্রধানমন্ত্রী

 



মানুষের জন্য কিছু করতেই আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


শুক্রবার আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় ভয়াল ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কথা স্মরণ করে তিনি এ কথা বলেন।


শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি না, আল্লাহ বোধহয় এ কারণেই বাঁচিয়ে রেখেছেন… বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছু যাতে করতে পারি, সেই জন্যই বাঁচিয়ে রেখেছেন। নইলে এই রকম অবস্থা থেকে বেঁচে আসা, এটা অত্যন্ত কষ্টকর।


বিএনপি-জামাত জোট সরকার তখন পুরো দেশটাকেই ‘সন্ত্রাসের রাজত্বে’ পরিণত করেছিল বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।


তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলার ঘটনায় তখনকার ক্ষমতাসীনরা ‘সরাসরি জড়িত ছিল’।


এজন্য সেদিন সংসদে ওই ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগকে কথা বলতেও ‘বাধা’ দেয়া হয়েছিল বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।


শেখ হাসিনা বলেন, একটা দেশে এই রকম একটা ঘটনা ঘটে গেছে, আমি বিরোধী দলের নেতা, আমার ওপর এমন একটা গ্রেনেড হামলা… বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মত একটি দল, যে দল দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, সেই দলের একটা সভায় এমন একটা গ্রেনেড হামলা, আর পার্লামেন্টে যিনি সংসদ নেতা, লিডার অফ দ্য হাউস, প্রধানমন্ত্রী, সে দাঁড়িয়ে বলে দিল- ‘উনাকে আবার কে মারবে’।


‘এখন তো বলতে হয় যে আপনিই তো মারবেন। চেষ্টা করেছেন, ব্যর্থ হয়েছেন, সেই জন্য আর পারছেন না। সেইদিন এই রকম তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে কথা বলে আমাদেরকে কোনো কথা বলতে দেয় নাই এই হামলা সম্পর্কে। অথচ আমাদের নেতাকর্মীরা, পার্লামেন্ট মেম্বাররা (তখন) আহত অবস্থায় হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন, মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।’


আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের সেই অধিকারটুকু পার্লামেন্টে ছিল না যে এর উপর আমরা আলাপ আলোচনা করতে পারি। আমাদের কাউকে মাইক দেয়নি, আলোচনা করতে দেয়নি। এর থেকে কী প্রমাণ হয়? তারা যদি সরাসরি জড়িত না থাকবে, তাহলে কি এই রকমভাবে বাধা দিত?


আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রান্তে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপসহ দলের কেন্দ্রীয়, মহানগরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


প্রসঙ্গত ২০০৪ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত মিছিল-পূর্ব সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা এবং গুলিবর্ষণ করে ঘাতকরা।


এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পাঁচ শতাধিক। যাদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন।


কেউ কেউ আর ফিরে পাননি স্বাভাবিক জীবন। আজও গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের দুর্বিষহ যন্ত্রণা ভোগ করছেন অনেকেই। যন্ত্রণা নিয়েই জীবন বয়ে চলেছেন, এগিয়ে যাচ্ছেন মৃত্যুর দিকে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১৮ সালে আদালত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রদান করেন।


আদালত এই দুই মামলার রায়ে জীবিত ৪৯ আসামির মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন। মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন।


যুগান্তর

মন্তব্যসমূহ