গাজার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭৩

  যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার উত্তরে বেইত লাহিয়ার একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর  হামলায় কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি এই তথ্য দিয়েছে। তবে ইসরায়েল বলেছে, গাজার একটি ‘সন্ত্রাসী’ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। খবর এএফপির। সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘গাজার উত্তরে বেইত লাহিয়ার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলার পর আমাদের এজেন্সির কর্মীরা ৭৩ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অনেকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও বেশ কয়েকজন শহীদের মরদেহ রয়ে গেছে।’ মাহমুদ বাসাল জানান, শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিনের শেষ ভাগে ইসরায়েলের চালানো ওই হামলায় বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু রয়েছে। হামলাটি চালানো হয় একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ইসরায়েলের সামরিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রতিরক্ষা বিভাগের (আইডিএফ) কাছে আসা তথ্যের সঙ্গে হতাহতের সংখ্যার মিল নেই। তবে, এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত বিবরণও তারা দেয়নি বা কাদের লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছ

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ওষুধ কিনতে পারছে না ইরান, বেড়েই চলছে মৃত্যুর মিছিল



সমগ্র বিশ্বের নজর ইতালি-ইউরোপের দিকে। অথচ ইরানে ভয়াবহ মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। প্রতি দশ মিনিটে একজন মারা যাচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। মার্কিন উদ্যোগে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা কঠিন থেকে কঠিনতর করা হয়েছে।

বিশ্ববাজার থেকে অন্যান্য পণ্যের মত ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামও কিনতে পারছে না ইরান। ফলে মহামারি রূপ নেওয়া কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে পারছে না দেশটি।

সম্প্রতি মাদ্রিদে ইরানের রাষ্ট্রদূত হাসান কাশকাভি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে না পারার বিষয়ে অভিযোগ করেছেন বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেসটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইরানই একমাত্র দেশ যারা যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিষ্ঠুর ও অমানবিক’ নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ব বাজার থেকে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনতে পারছে না। যা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইকে বাধাগ্রস্ত করছে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। ‘ইরানের বিরুদ্ধে চলমান চাপকে আরও কঠোর করতে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবকে তারা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে।

ইরানের বিচার বিভাগের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কাউন্সিলের প্রধান আলী বাকেরি কানি বলেন, ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ নিষেধাজ্ঞাগুলো মেনে চলেছে। যা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে ইরানের লড়াইকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

তিনি আর বলেন, ইউরোপীয়রা সবসময় দাবি করে থাকে তারা মানবাধিকারের সমর্থক। কিন্তু, এমন কঠিন পরিস্থিতিতে তাদের আচরণের জন্য লজ্জিত হওয়া উচিৎ। তারা ভালো করেই জানে ইরানে করোনাভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে চুপ থাকাও মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে ইরান মনে করে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রাণঘাতী করোনার পরীক্ষা কিট আমদানি করতে পারছে না তেহরান। এর জেরে প্রতিদিনই এ ভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

করোনা কিট সংগ্রহ না করতে পারার এ তথ্য দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন ইরানের মেডিকেলসামগ্রী আমদানিকারকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ইম্পোর্টার্স। সংগঠনটি পরিচালনা বোর্ডের সদস্য রামিন ফাল্লাহ বলেন, করোনাভাইরাস পরীক্ষা কিট ইরানকে দেয়ার জন্য অনেক কোম্পানি প্রস্তুত আছে। কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা তাদের কাছে অর্থ পাঠাতে পারছি না।

এদিকে, শুক্রবার ইরানের ভয়াবহ এ সংকট মুহূর্তে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এ দুর্যোগ মোকাবেলায় ইরানের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

 পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল পিটিভি নিউজ জানায়, শুক্রবার করোনাভাইরাস মোকাবেলায় গঠিত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির বৈঠক শেষে ইমরান খান এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান। এর আগেও বেশ কয়েকবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এমন আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আরোপিত নিপীড়নমূলক নিষেধাজ্ঞার শিকার ইরান। এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে তেহরান আরও নির্বিঘ্নে করোনাভাইরাসবিরোধী অভিযান চালাতে পারবে। এ সময় ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য মার্কিন প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বানও জানান ইমরান খান। এর আগে গত সপ্তাহেও ইরানের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি চীন সফর শেষে ইসলামাবাদে ফিরেও একই আহ্বান জানান।

মন্তব্যসমূহ