হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

লন্ডনে আগুন: 'শিশু কোলে নারী জানালার ধারে চিৎকার করছিল'

লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড বলছে, পশ্চিম লন্ডনে লাটিমার রোডের যে বহুতল ভবনে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে, তাতে 'বহু হতাহত' হয়েছে।
শহরের নর্থ কেনসিংটনে অবস্থিত 'গ্রেনফেল টাওয়ার' নামের ওই আবাসিক ভবনটিতে ব্রিটেনের স্থানীয় সময় রাত সোয়া একটার দিকে আগুন লাগে।
প্রায় দুইশো'র মতো দমকলকর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ভবনে বহু মানুষ আটকা পড়ে আছে।
লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স জানাচ্ছে, ভবন থেকে ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে, যারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গ্রেনফেল টাওয়ারের সাত তলার বাসিন্দা পল মুনাকর কোনোরকমে ভবন থেকে বাইরে বের হয়ে আসেন।
"আমরা যখন সিড়ি দিয়ে নামছিলাম তখন দেখলাম দমকলকর্মীরা ওপরে উঠছে। তারা আগুনের মধ্যে ঢুকে যেভাবে পারছে মানুষকে বের করে আনার চেষ্টা করছে"- বিবিসিকে বলেন পল মুনাকর।
তিনি জানান, ভবনে যে আগুন লেগেছে সেটা কিন্তু তিনি ফায়ার অ্যালার্মের মাধ্যমে বুঝেননি। রাস্তায় থাকা মানুষেরা চিৎকার করে বলছিল 'ঝাঁপ দিও না, ঝাঁপ দিও না' তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে ভবনে আগুন লেগেছে।
"আগুন থেকে বাঁচার জন্য কত মানুষ নিচে ঝাঁপ দিয়েছে আমি জানি না । কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এটাই যে ভবনের ফায়ার অ্যালার্ম বাজেনি", বলছিলেন মি. মুনাকর।
অন্যদিকে জর্ডি মার্টিন নামে আরেকজন জানান আগুন দেখার পর প্রথমে তিনি দৌড়ে ভবনটির কাছে গিয়ে বাসিন্দাদের বেরিয়ে আসতে বলেন।
"আমি একজনকে পড়ে যেতে দেখেছি, শিশু কোলে এক নারীকে দেখেছি জানালার ধারে চিৎকার করছিল....।"
"আমি সবাইকে বাইরে বের হতে বললেও ভবনে আটকে থাকা লোকজন চিৎকার করে বলছিলেন তাদের বাইরে বের হবার উপায় নেই। কারণ করিডোরের ভেতরটা পুরোটা ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল সে সময়"।
অন্যদিকে বিবিসির সংবাদদাতা অ্যান্ডি মুর বলেন, "ভবন থেকে ধ্বংসাবশেষ পড়তে দেখছি। আমরা বড় বিস্ফোরণের শব্দও শুনেছি। কাঁচ ভাঙার শব্দও পেয়েছি।"
জর্জ ক্লার্ক নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসি রেডিও ফাইভকে জানিয়েছেন, "আমার সারা গায়ে ছাই লেগে গেছে। আগুনটা কত ভয়াবহ হতে পারে চিন্তা করুন"।
"আমি প্রায় ১০০ মিটার দূরে এবং পুরোপুরি ছাইয়ে ঢেকে গেছি"।
"এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আমি দেখেছি ভবনের উপরের দিকে কেউ টর্চ জ্বালাচ্ছিল। তারা অবশ্যই বের হতে পারেনি। হয়তো তারা বেঁচে নেই," বলছিলেন মি. ক্লার্ক।
বিবিসির সাইমন লেডারমেন জানান, "ভবনটি যেভাবে জ্বলছে, তা কয়েক মাইল দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে"।
ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে জানাচ্ছেন তিনি।
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার ডেন ডেলি বলছেন, "পরিস্থিতি ভয়াবহ। এমন জটিল পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা"।
"অনেক বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এটি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি" - বলেন তিনি।
আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়া কয়েকজনকে চিকিৎসাও দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের জরুরি বিভাগের কর্মকর্তাদেরও ভবনটিতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এটাকে "অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা" বলে বর্ণনা করেছেন।
আগুনের এই ঘটনার পর লন্ডন পাতাল রেলের হ্যামারস্মিথ এবং সিটি অ্যান্ড সার্কেল লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, তারা ছাদের ওপর থেকে আলো নাড়ানো দেখেছেন। ভবনে থাকা লোকজন ছাদের ওপর থেকে টর্চের আলো দিয়ে সাহায্যও চেয়েছেন। আর্তনাদও তারা শুনতে পেয়েছেন।
ভবনটিতে আগুন লাগার তিন ঘণ্টা পর পুলিশ বলছে, ভবনের ভেতর থেকে তখনো লোকজনকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিবিসি

মন্তব্যসমূহ