গতকাল শনিবার ছিল প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের ১০০তম দিন। হোয়াইট হাউসের খবর সংগ্রহে নিয়োজিত সাংবাদিকেরা এই দিন হোয়াইট হাউসে এক নৈশভোজে মিলিত হন। এই অনুষ্ঠান ‘হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্স ডিনার’ নামে পরিচিত। রেওয়াজ অনুযায়ী, প্রতিবছর এই ডিনারে প্রেসিডেন্ট উপস্থিত থাকেন। ওই ভোজসভায় আমেরিকার সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর অবাধ চর্চা করা হয়। সরকারের সমালোচনা করা হয়। আমেরিকার সেরা কমেডিয়ানরা প্রেসিডেন্টকে নিয়ে কৌতুক করেন। প্রেসিডেন্টও কৌতুকে যোগ দেন।
তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ট্রাম্প ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন না। তিনি পেনসিলভানিয়ায় একটি সভায় বক্তব্য দেন।
সন্ধ্যায় সমস্ত আমেরিকার চোখ ছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্স ডিনারের দিকে।
হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্স ডিনারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুপস্থিতি থাকলেও তুলাধোনা করতে ছাড়েননি কমেডিয়ান হাসান মিনহাজ। তিনি কৌতুক করেই বলেন, ‘আমাদের নেতা (এই ‘নেতা’ বলতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ইঙ্গিত করা হয়েছে) মস্কোতে থাকেন। মস্কো থেকে এসে নৈশভোজ ধরতে পারবেন না। আর অন্যজন কৌতুক হজম করতে পারবেন না বলে পেনসিলভানিয়াতে গেছেন।’ মিনহাজ সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা এখন এ দেশে মাইনরিটি। মাইনরিটি হওয়ার জ্বালাটা এবার বুঝুন!’ কমেডিয়ান মিনহাজ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মাথায় যা আসে, তা-ই তিনি টুইট করেন। অথচ তিনি বোঝেনই না সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর কারণেই তিনি তা করতে পারছেন।’
আমেরিকার সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে মতপ্রকাশ এবং কথা বলার অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের বার্ষিক নৈশভোজে মতপ্রকাশ এবং কথা বলার এ অবাধ স্বাধীনতাই চর্চা করা হয়।
ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বৈরী সম্পর্ক চলছিল। আগেই হোয়াইট হাউস থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ নৈশভোজে থাকবেন না। গত ৩৬ বছরের রেওয়াজ ভঙ্গ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেকে সরিয়ে রাখেন সাংবাদিকদের জমকালো অনুষ্ঠান থেকে। হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্স ডিনারে প্রথমবারের মতো প্রথম প্রজন্মের আমেরিকান মুসলমান তরুণ কমেডিয়ানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ কারণেই সবার দৃষ্টি ছিল প্রেসিডেন্ট এবং ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় সাংবাদিকদের নৈশভোজের দিকে।
পেনসিলভানিয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সম্পূর্ণ ব্যর্থ। নিউইয়র্ক টাইমস, সিএনএন এবং এমএসএনবিসির নাম উল্লেখ করে তিনি বিষোদ্গার করেন। সংবাদমাধ্যমের অগ্রাধিকার এবং আমেরিকার জনগণের অগ্রাধিকার এক নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। পেনসিলভানিয়ার হ্যারিসবার্গে তাঁর উৎফুল্ল সমর্থকদের উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট তাঁর গত ১০০ দিনের সাফল্যগাথা তুলে ধরেন। ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনে এমন সফলতা নজিরবিহীন বলে তিনি উল্লেখ করেন। অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে শুরু করে ওবামা কেয়ার বাতিলের উদ্যোগ, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের উদ্যোগসহ তাঁর প্রশাসনের সাফল্যের কথা তিনি বলেন। তিনি বলেন, জনগণের স্বার্থে আরও বড় বড় সিদ্ধান্ত আসছে।
মন্তব্যসমূহ