শুক্রবার ক্লাসের সিদ্ধান্ত হয়নি, ভুলবশত ফেসবুকে পোস্ট হয়েছিল

শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বরাতে যে বক্তব্যটি শিক্ষামন্ত্রণালয় তাদের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট দিয়েছিল তা ভুলবশত বলে জানিয়েছে তারা। অপর এক পোস্টে আজ রোববার (৫ মে) বিকেলে ৪টার দিকে এই তথ্য জানায় তারা। এই পোস্টে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে,  শুক্রবারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ফেসবুক পেজ থেকে আগের পোস্টটি সরিয়ে নতুন পোস্টে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে ‘শুক্রবার শিক্ষা খোলার বিষয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড পেজে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে দেওয়া তথ্য ভুলবশত পোস্ট করা হয়েছে। এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত শনিবারের পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’  এর আগে একই পেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের এখন বছরে স্কুলের মোট কর্মদিবস ১৮৫টি। এর মধ্যে ২০ দিন নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নের জন্য রাখা হয়েছে। স্কুলের কর্মদিবস যদি আরও কমে যায়, শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে।’

অবশেষে কারাগারে শশীকলা, থাকতে হবে ৪ বছর

আত্মসমর্পণ করলেন ভারতের তামিলনাড়ুর অল ইন্ডিয়া দ্রাবিড়া মুনেত্রা কাঝাগাম (এআইএডিএমকে)-দলের সাধারণ সম্পাদক শশীকলা নটরাজন(৬১)। বুধবার বিকেল পাঁচটার কিছু পরে বেঙ্গালুরু শহরের পারাপ্পানা অগ্রহারা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছন শশীকলা।

কারাগার চত্বরে অবস্থিত বিশেষ আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এদিন তার সঙ্গেই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আয় বহির্ভূত মামলায় অভিযুক্ত ইলাভারসী। এ সময় সেখানে উপিস্থিত ছিলেন শশীকলার স্বামী নটরাজন ও লোকসভার ডেপুটি স্পীকার এবং এআইএডিএমকে’এর সিনিয়র নেতা থাম্বিদুরাই।

এই মুহূর্তে তাকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে সমস্ত আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার কাজ চলছে। প্রক্রিয়া শেষে তার মেডিকেল চেক-আপ করা হবে। এরপর এদিন রাতের দিকেই শশীকলাকে কারাগারের নারী সেলে নিয়ে যাওয়া হবে। সেক্ষেত্রে আগামী চার বছর জেলের ১০৭১১ নম্বর কুঠুরিতেই কাটাতে হবে আম্মা ঘনিষ্ঠ এই নেত্রীকে, পাশের ১০৭১২ নম্বর কুঠুরিতে থাকতে হবে ইলাভারসীকে।


আয় বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় গতকাল মঙ্গলবারই শশীকলাকে চার বছরের জন্য কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে জরিমানা করা হয় ১০ কোটি রুপি। পাশপাশি খুব শিগগির নিম্ন আদালতের কাছে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। ভেঙে যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন। এরপরই আত্মসমর্পণের জন্য চার সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন শশীকলা। কিন্তু বুধবার তাঁর সেই আর্জি খারিজ করে দেয় দেশটির শীর্ষ আদালত।

বিচারপতি পিনাকী চন্দ্র ঘোষের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয় ‘এ ব্যাপারে আমরা নতুন কোন নির্দেশ দিতে চাই না। মঙ্গলবারের রায়ে কোন বদল হচ্ছে না’। এরপরই কার্যত হতাশ হয়ে আত্মসমর্পণ করতে চেন্নাই থেকে বেঙ্গালুরুর দিকে রওনা দেন আম্মা ঘনিষ্ঠ এই নেত্রী।

এর আগে এদিন বেলা পৌনে ১১টার দিকে পোয়েজ গার্ডেনের বাসভবন থেকে বের হন শশীকলা, সঙ্গে ছিলেন দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত তারই ননদ জে. ইলাভরসী, কয়েকজন নিকট আত্মীয় ও দলের কয়েকজন বিধায়ক, নেতা-নেত্রীরা। সেখান থেকে সোজা চলে যান চেন্নাইয়ের মেরিনা বিচে। সেখানে রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও তার কাছের সঙ্গী প্রয়াত জয়ললিতার সমাধিস্থলে গিয়ে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান শশীকলা।

শীর্ষ আদালতের মঙ্গলবারের রায়ের ফলে চার বছর সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের ছয় বছর তিনি আর কোন ভোটেই দাঁড়াতে পারবেন না। ফলে আগামী ১০ বছরের জন্য রাজনীতির ময়দান থেকে দূরে থাকতে হবে তাকে। আদালতের রায়ের পর মঙ্গলবার দুপুরেই তার অনুগত বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেন শশীকলা।

বৈঠকে এআইএডিএমকে দল থেকে রাজ্যটির কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী পনিরসেলভমসহ বিশজন বিধায়কের প্রাথমিক সদস্যপদ খারিজ করে দেন শশীকলা। এর পাশাপাশি ‘প্রক্সি সিএম’ হিসাবে ই.কে.পালানিস্বামীকে নির্বাচিত করেন তিনি। ১২৫ জন বিধায়ক দলের দলনেতা হিসাবেও মনোনীত করা হয় পালানিস্বামীকে। কারণ পালানিস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসালে সরকারের রাশ নিজের হাতেই রাখতে পারবেন শশীকলা।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর জয়ললিতার মৃত্যুর পরই ওইদিন রাতেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন পনিরসেলভম। এর কয়েকদিন পরে এআইএডিএমকে-দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন শশীকলা। কিন্তু এরপরই তৈরি হয় নতুন সমস্যা। পনিরসেলভমকে সরিয়ে তারই মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য শশীকলাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসানোর জন্য দাবি তোলেন। এরপরই গত ৫ ফেব্রুয়ারি চেন্নাইয়ে দলের বিধায়কদের নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন পনিরসেলভম এবং রাজ্যপাল সি.বিদ্যাসাগর রাওয়ের কাছে নিজের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেন তিনি।

অন্যদিকে বিধায়ক দলের নেতা নির্বাচিত করা হয় শশীকলাকে। যদিও নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পনিরসেলভমকেই কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন রাজ্যপাল। কিন্তু দুইদিন পর হঠাৎ করেই বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন পনিরসেলভম। শশীকলার বিরুদ্ধে আক্রমণ করে পনির জানান, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্থফা দিতে তাকে বাধ্য করা হয়েছে। দলের কর্মীরা চাইলে তিনি তার ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করে নিতেও রাজি। এরইমধ্যে শশীকলা শিবির থেকে কয়েকজন বিধায়ক পনিরসেলভমের দিকে ঝুঁকতে থাকে। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে দুই শিবিরই দাবি করে তারা সরকার গড়তে প্রস্তুত। এরই মধ্যে শশীকলার বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত মামলায় শীর্ষ আদালতের এই রায়।

এদিকে চেন্নাইয়ের গোল্ডেন বে রিসোর্টে নিজেকে আটকে রাখার অভিযোগ শশীকলা ও পালানিস্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেন এআইএডিএমকে-এর এক বিধায়ক এস. সারাভানন। মাদুরাই দক্ষিণ কেন্দ্রের এই বিধায়কের অভিযোগ তাঁকে প্রথমে অপহরণ করা হয়েছিল এবং গোল্ডেন বে রিসোর্টে জোর করে আটকে রাখা হয়। পরে পাঁচিল টপকে পালিয়ে পনিরসেলভমের দলে যোগ দেন বলেও জানান। বিস্তারিত জানিয়ে চেন্নাইয়ের কুভাথুর পুলিশ থানায় দুই জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন সারাভানন।

সূত্র: এনডিটিভি

মন্তব্যসমূহ