ভারত যাওয়ার পথে মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তসহ আটক ৪

  ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা হয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোজাম্মেল হক বাবু এবং দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টার দিকে দক্ষিণ মাইজপাড়া ও পোড়াকান্দুলিয়া সীমান্তের মাঝামাঝি এলাকায় একটি প্রাইভেট কারসহ চারজনকে আটক করে ধোবাউড়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে জনতা। দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অন্যদিকে একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু সম্পাদকদের একটি সংগঠন এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের সভাপতি। এ সময় অন্য দুজন হলেন- একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মাহবুবুর রহমান, প্রাইভেট কার চালক মো. সেলিম। ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চাঁন মিয়া বলেন, রোববার রাতে সীমান্ত এলাকা থেকে স্থানীয় জনতা আটক করে তাদের ধোবাউড়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আটকরা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াগি : ভিয়েতনামে এ পর্যন্ত নিহত ২৫৪

 




ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির আঘাত এবং তার জেরে সৃষ্ট ঝোড়ো হাওয়া- প্রবল বর্ষণ-বন্যা ও ভূমিধসে ভিয়েতনামে এ পর্যন্ত মৃতের মোট সংখ্যা ২৫৪ জনে পৌঁছেছে। নিকট ভবিষ্যতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।


কারণ দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই দুর্যোগে আহত হয়েছেন ৮২০ জনেরও বেশি মানুষ এবং এখনও নিখোঁজ আছেন অন্তত ৮২ জন। নিখোঁজদের সন্ধানে তৎপরতা এখনও জারি রয়েছে।


দক্ষিণ চীন সাগরের একটি নিম্নচাপ থেকে উদ্ভূত ঘূর্নিঝড় ইয়াগি গত ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে আছড়ে পড়ে। ভিয়েতনামে আসার আগে ফিলিপাইনের লুজন প্রদেশ এবং চীনের কোটু দ্বীপেও তাণ্ডব চালিয়েছে ইয়াগি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আবহাওয়া সংস্থার কর্মকর্তাদের মতে, চলতি ২০২৪ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত এশিয়ায় যত ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে, সেসবের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এই ইয়াগি।


শনিবার সকালে উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে আঘাত হানার পর রাজধানী হ্যানয়ের দিকে এগোতে শুরু করে ইয়াগি। যেসব এলাকার ওপর দিয়ে ঝড়টি গিয়েছে, সেসব এলাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ২৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠেছিল বলে জানিয়েছেন ভিয়েতনামের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা।


এদিকে, ঝড়ের তেজ খানিকটা কমে এলেও প্রবল বর্ষণ, বন্যা ও ভূমিধসের মতো দুর্যোগের কবলে পড়েছে ভিয়েতনামের বিভিন্ন অঞ্চল। রেড রিভার নদীর পানি রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানী হ্যানয়ের বিস্তির্ন এলাকা ডুবে গেছে।


শহরাঞ্চলের লোকজন তবু বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়, খাদ্য ও ওষুধ পাচ্ছেন, কিন্তু গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজনের অবস্থা ভালো নয়। ভূমিধস ও বন্যার কারণে দেশটির একটি প্রত্যন্ত গ্রাম লাও কাইয়ের বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁশ ও তারপুলিন খাটিয়ে বাস করতে থাকা এই লোকজনদের ব্যাপক খাদ্য সংকটে ভুগছেন।


লাও কাই গ্রামের গ্রামপ্রধান ভ্যাং সিও চু রয়টার্সকে বলেন, “বাড়িঘর ছেড়ে আসার সময় আমরা সঙ্গে করে শুধু চাল আর কিছু খাবার আনতে পেরেছিলাম। তিন দিন আগে আমাদের খাবার শেষ হয়ে গেছে, সেই থেকে জঙ্গলের বাঁশ কোড়ল খেয়ে টিকে আছি।”


সরকারি-বেসরকারি কোনো ত্রাণবাহী টিম এখন পর্যন্ত তাদের গ্রামের কাছাকাছি এসে পৌঁছায়নি বলেও জানিয়েছেন ভ্যাং সিও চু।


জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, ইয়াগির আঘাতে ভিয়েতনামের বহু এলাকায় হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বন্যা উপদ্রুত লোকজন বিভিন্ন স্কুলে আশ্রয় নেওয়ায় সেখানে লেখাপড়া বন্ধ রয়েছে অন্তত ২০ লাখ শিশুর।

মন্তব্যসমূহ