হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

ফিলিস্তিনিদের ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার ইসরায়েলি বাহিনীর

 




ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের হামলা ঠেকাতে না পারায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গত ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলের কিবুটজ বেরিতে নজিরবিহীন হামলায় নিজেদের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী।


বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।


ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবরে হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলার সময় তারা কিবুটজ বেরির জনগণকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রথম তদন্তে এ হামলার ঘটনায় নিজেদের নিরাপত্তা ব্যর্থতার বিষয়টি উঠে এসেছে।


হামাসের এ হামলায় বেরির এক হাজার লোকের মধ্যে ১০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া হামলার সময় অন্তত ৩২ জনকে জিম্মি করা হয়। যাদের মধ্যে এখনো ১১ জন ফিলিস্তিনিদের হাতে জিম্মি রয়েছেন।


বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তদন্তে ওই দিনের ঘটনা, লড়াই এবং নিরাপত্তা বাহিনীর আচরণ পরীক্ষা করা হয়েছে। কিবুটজের নাগরিকদের সুরক্ষায় নিজেদের ব্যর্থতার বিষয়টি স্বীকার করার সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার বাসিন্দাদের সাহসকতা ও নিজেদের দ্রুত প্রতিক্রিয়ার প্রশংসা করেছে ইসরায়েল।


তদন্তে দেখা গেছে, ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের ব্যাপক অনুপ্রবেশের ঘটনায় সেনাবাহিনী অপ্রস্তুত ছিল। এ ছাড়া এলাকায় অপর্যাপ্ত সেনাবাহিনী এবং দুপুর পর্যন্ত ঘটনাগুলোর বিষয় স্পষ্ট ছিল না। ফলে তারা হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা পরও বাসিন্দাদের সঠিকভাবে সতর্ক করতে পারেনি। এছাড়া এদিনের লড়াই ছিল সমন্বয়হীন।


তদন্তে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি বাড়িতে ট্যাংক হামলার বিষয়টিও উঠে এসেছে, যেখানে যোদ্ধারা প্রায় ১৫ জনকে জিম্মি করে রেখেছিল। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সেনাবাহিনী। অভিযোগ করা হয় যে এ ঘটনায় বেসামরিক লোকদের ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তবে এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর কোনো দোষ খুঁজে পায়নি ইসরায়েল।


সেনাবাহিনীর তদন্তের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, ভেতর থেকে গুলি এবং হামাসের যোদ্ধাদের নিজেদের ও জিম্মিদের হত্যার উদ্দেশ্যে ঘোষণা দেওয়ার পর জিম্মিদের বাঁচাতে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।


এতে আরও বলা হয়েছে, বাড়িটির ভেতরে থাকা লোকেরা কেউ ট্যাংকের গুলিতে আহত হননি। তবে জিম্মিদের কিভাবে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়ে আরও তদন্ত প্রয়োজন। কেননা নিহতের শরীরে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।


উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দেশটির এ হামলার জবাবে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এ যুদ্ধ শুরু হয়। ক্রমেই তীব্র থেকে তীব্রতর রূপ নেয় যুদ্ধ। এরপর থেকে গাজার ওপর বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদসহ ধর্মীয় স্থাপনাও।


সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার ২০ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। দেশটির হামলার কারণে ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা।

মন্তব্যসমূহ