হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

জাবিতে মিছিলে ছাত্রলীগের হামলায় শিক্ষক সাংবাদিকসহ আহত অর্ধশতাধিক

 




জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলায় এক শিক্ষক, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক।


এ প্রতিবেদন লেখার সময় (রাত সাড়ে ৯টা) আহতদের ২০ জনকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


এদের মধ্যে পাঁচজনকে ভর্তি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. দিনার।


আহতদের মধ্যে রসায়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আওলাদ হোসেন ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোসাদ্দেকুর রহমানও রয়েছেন।


আজ সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।


হামলার পর ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ মুখোমুখি অবস্থানে থাকায় ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে টান টান উত্তেজনা।


এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ও ছাত্রছাত্রীদের ১৩টি হল প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল অতিক্রমের সময় অতর্কিত মিছিলে হামলা করে ছাত্রলীগ।


এ সময় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন।


প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অবস্থান করছিল। আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে দিয়ে বটতলার দিকে অগ্রসর হলে হামলার শিকার হয়।


হামলায় আহতদের প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অনেককেই চিকিৎসার জন্য সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।


আহতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ ইসলাম (মেঘ), বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আব্দুর রশিদ (জিতু), যুগান্তর পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোসাদ্দেকুর রহমান, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন প্রমুখ।


আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব মাহফুজ ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে আক্রমণ করা হয়। যাকে যেভাবে পেয়েছে সেভাবে পিটিয়েছে। কাউকে কাঁদার মধ্যে ডুবিয়ে রেখেছে। আবার কাউকে এলোপাতাড়ি লাথি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে।’


আহত যুগান্তর পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোসাদ্দেকুর রহমান জানান, ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামানের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী বটতলা এলাকায় লাঠিসোটা নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করে। এ সময় নারী শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারধর করে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী।


তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। আমরা হামলা করবো কেন! বরং কোটাবিরোধীরাই আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে। এতে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। ক্যাম্পাস আমাদের নিয়ন্ত্রণে। এখানে অন্যায্য কোনো কিছু ঘটলে আমরা শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ করব, ছাত্রলীগের অস্তিত্ব থাকতে কেউ এই ক্যাম্পাসে অরাজকতা করতে পারবে না।’


এদিকে রাত ৮টা ২৫ মিনিটে আন্দোলনকারীরা ধাওয়া দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ঢুকে যান। এ সময় হলের ছাদ থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইপাটকেল ছুড়তে থাকেন। অন্যদিকে হলের সামনে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তাঁরা ছাত্রলীগকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন।


উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাস ঘিরে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

মন্তব্যসমূহ