জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের ছয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না। শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’ দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ...

বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী সদস্যদের শান্তিরক্ষা মিশনে না নিতে অ্যামনেস্টির বিবৃতি

 




বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িতরা যেন জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে যেতে না পারে, তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়ার প্রতি আসন্ন ঢাকা সফরে বাংলাদেশের বাহিনীগুলোর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা পর্যালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।


অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শুক্রবার (২৩ জুন) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে।


জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা প্রধান ল্যাক্রোয়া আগামী ২৫-২৬ জুন বাংলাদেশ সফর করবেন। তাঁর এই সফর সামনে রেখে ১২ জুন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) পক্ষ থেকেও একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানেও জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মানবাধিকার-সংক্রান্ত বিষয় যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানানো হয়।


অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ তিন দশক ধরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাঠাচ্ছে। বিশ্বের যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি শান্তিরক্ষী পাঠায়, সেগুলোর একটি বাংলাদেশ। অতীতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বিশেষ করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বিবেচনায় নিলে বিষয়টি উদ্বেগের।


বিবৃতিতে বলা হয়, র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতনসহ নানা খারাপ আচরণের অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিরোধী রাজনীতিক, মানবাধিকারকর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী ও প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যখন র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল, তখন তারা গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার, মানবাধিকারকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের হুমকি, ভয় দেখানো ও হয়রানি শুরু করে বলে খবর রয়েছে। র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বিবেচনায় নিয়ে জাতিসংঘের র‌্যাব সদস্যদের শান্তি রক্ষা মিশনে নেওয়া স্থগিত রাখা উচিত। যতক্ষণ পর্যন্ত মিশনে অংশগ্রহণকারীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনে সম্পৃক্ততা না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়, সে পর্যন্ত এটা স্থগিত রাখার পক্ষে অ্যামনেস্টি। 


বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনসংক্রান্ত বিষয় যাচাই-বাছাই করে জাতিসংঘ। এই যাচাই-বাছাই শুধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে সীমিত রাখা উচিত হবে না।


সংস্থাটির ভাষ্যমতে, বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্তদের দায়মুক্তি দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। তাঁদের পদোন্নতিও দেওয়া হয়। বাংলাদেশকে এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আমলে নিয়ে অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। দায়মুক্তির চর্চা থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের যেন নিজ দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস না থাকে, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সফরে জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়াকে মূল নজর দিতে হবে বাংলাদেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে।

মন্তব্যসমূহ