জিম্মিকে ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরাইলের ছয় বন্দির মুক্তির বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরাইলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরাইলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না। শনিবার দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। নেতানিয়াহু বলেন, ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।’ দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ...

খেতে বসে পরিবার হারানো এক ফিলিস্তিনি পরিবারের গল্প

 




অন্যদিনের মতোই দুপুরে নিজ বাড়িতে খেতে বসেছিলেন ৩৩ বছরের ইয়াদ সালেহ। ১৪ বছর ধরে হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন তিনি। একটু পরেই খাবার শুরু করবেন তিনি। কিন্তু তার আগেই দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সবকিছু। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, তিন বছরের কন্যা ও ভাইয়ের সঙ্গে প্রাণ যায় ইয়াদ সালেহরও। 


বুধবার দুপুরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দেইর-এল-বালা এলাকায় মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটে। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে ইহুদিবাদী ইসরাইলের আগ্রাসী মনোভাবের সঙ্গে সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের কথাও ফুটে উঠে। 


গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে,, ১০ মে থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলি বিমান হামলায় ২২৭ জন নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬৪ জনই শিশু।


বুধবার দুপুরে হুইলচেয়ারে বসে ইয়াদ সালেহ মধ্যাহ্নভোজের অপেক্ষা করছিলেন, আর কয়েকঘন্টা পরেই তার পুরো পরিবারের খোঁজ পাওয়া গেল লাশের মর্গে। 


আল জাজিরার খবরে বলা হয়, বিস্ফোরণের পর ইয়াদ সালেহর লিভিং রুমের সবকিছু ভেঙেচুরে যায়। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়েছিল ছোট্ট মেয়েটির দুমড়েমুচড়ে যাওয়া লাল রঙের খেলনা সাইকেল। মধ্যাহ্নভোজের জন্য ফ্রিজ থেকে খাবার বের করছিলেন পরিবারের সদস্যরা। ভেঙে গেছে সেই ফ্রিজটিও। ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে গেছে টমেটো ভরা বাটিটি।


ইয়াদ সালেহর ভাই ওমর সালেহ (৩১) জানান, তার ভাই ১৪ বছর ধরে হাঁটতে পারতেন না। তিনি কোনো যুদ্ধ বা সংঘর্ষের সঙ্গে যুক্ত নন। 


একবুক ব্যথা নিয়ে তাই ওমর সালেহ’র জিজ্ঞাসা, ‘আমার ভাই কী করেছিল? তিনি তো হুইলচেয়ারে বসা। আমার ভাইয়ের মেয়ে কী করেছে? তার স্ত্রী কী করেছে। তারা তো মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করছিল।’


গাজার উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউসুফ আবু আল রশিদ বলেন, ঘরের মধ্যে নির্দোষ ব্যক্তিদের হত্যা করা বড় অপরাধ। আর কত মৃত্যু হলে বিশ্বের বিবেক জেগে উঠবে?

মন্তব্যসমূহ