রাষ্ট্রপতি উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চিসহ শাসক দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে আটকের পর মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্টকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। খবর বিবিসি’র।
সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) শীর্ষ নেতাদের আটকের মধ্যদিয়ে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ।
এদিকে এনএলডি নেত্রী অং সান সু চি এবং দেশটির রাষ্ট্রপতি উইন মিনতকে আটকের পর রাজধানী নেপিডো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল জোড়দার করা হয়েছে। এছাড়া দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে সেনা টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সকাল থেকে বড় শহরগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ‘টেকনিক্যাল সমস্যার’ কারণে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রেডিওর সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।
বিবিসিরি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রতিনিধি জনথন হেড জানিয়েছেন, ‘মনে হচ্ছে এটি একটি পূর্ণ সামরিক অভ্যুত্থান।’
রাজধানী ইয়াঙ্গুন থেকে আল জাজিরাকে আলি ফোউল জানিয়েছেন, ‘মনে হচ্ছে এটি সামরিক অভ্যুত্থানের শুরু। রাষ্ট্রীয় এবং আঞ্চলিক রাজনৈতিক নেতাদের আটক করা হয়েছে। এছাড়া বিখ্যাত রাজনৈতিক কর্মীদেরও আটক করা হয়েছে। মোবাইল এবং ফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিওর সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।’
মিয়ানমার রেডিও এবং টেলিভিশন তাদের ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, ‘যোগাযোগ সমস্যার কারণে এমআরটিভি এবং রেডিওর নিয়মিত অনুষ্ঠান প্রচার করা সম্ভব হচ্ছে না।’
সোমবার সকালে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের আটক করে দেশটির সেনাবাহিনী।
মূলত গত ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সু চি’র দলের আজ সোমবার সংসদ আহ্বান করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সু চিকে গ্রেপ্তার করা হলো।
এই নির্বাচন নিয়ে বেসরকারি সরকার এনএলডি ও শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। নির্বাচনে সু চি’র দল ৩৬৪টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) প্রতারণা ও ভোট কারচুপির অভিযোগ করে আসছে শুরু থেকেই।
গত সপ্তাহে সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লাইয়াং যৌক্তিকভাবে নির্বাচনের জালিয়াতিকে চিহ্নিত করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনী ও সুচির দল এনএলডি’র মধ্যে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সেটার জের ধরেই সোমবার ভোর রাতে সু চি ও উইন মিন্টকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।
মন্তব্যসমূহ