গাজার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭৩

  যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার উত্তরে বেইত লাহিয়ার একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর  হামলায় কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি এই তথ্য দিয়েছে। তবে ইসরায়েল বলেছে, গাজার একটি ‘সন্ত্রাসী’ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। খবর এএফপির। সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘গাজার উত্তরে বেইত লাহিয়ার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলার পর আমাদের এজেন্সির কর্মীরা ৭৩ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অনেকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও বেশ কয়েকজন শহীদের মরদেহ রয়ে গেছে।’ মাহমুদ বাসাল জানান, শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিনের শেষ ভাগে ইসরায়েলের চালানো ওই হামলায় বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু রয়েছে। হামলাটি চালানো হয় একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ইসরায়েলের সামরিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রতিরক্ষা বিভাগের (আইডিএফ) কাছে আসা তথ্যের সঙ্গে হতাহতের সংখ্যার মিল নেই। তবে, এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত বিবরণও তারা দেয়নি বা কাদের লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছ

নাগরনো-কারাবাখে যুদ্ধ-বিরতি লঙ্ঘিত হয়েছে : রাশিয়া

 





বিতর্কিত নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে যুদ্ধ-বিরতি লঙ্ঘিত হয়েছে বলে রিপোর্ট করেছে রাশিয়ান সেনাবাহিনী । এর মাধ্যমে নভেম্বরের যুদ্ধ-বিরতি চুক্তির মাধ্যমে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যেকার যুদ্ধ বন্ধের পর আবারো এ অঞ্চলে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ল। কোন পক্ষকে দোষারোপ না করে রুশ প্রাতিরক্ষা মন্ত্রনালয় গত শনিবার বলেছে, ‘হাদরাত জেলায় গত ১১ ডিসেম্বর যুদ্ধ-বিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা লক্ষ্য করা গেছে।’


যে অঞ্চলে রাশিয়ার শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত আছে তার বৃহৎ অংশ্ই আজারবাইজন গত মাসে পুনরুদ্ধার করেছে যা পূর্বে ২৫ বছর যাবত আর্মেনিয়ার দখলে ছিল।


গত ১০ নভেম্বর শান্তিচুক্তির পর রাশিয়া এ প্রথম অস্ত্র-বিরতি লঙ্ঘনের অভিয্গে করল।


রোববার আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় বলেছে , ওই সেনাদলটি নাগরনো-কারাবাখ সংলগ্ন এলাকায় হামলার শিকার হয়ে তাদের চারজন সৈন্য নিহত হয়েছে। অপরদিকে আর্মেনিয়া কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের ছয়জন সেনা সদস্য আহত হয়েছে।


গত শনিবার আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান একে-অপরকে যুদ্ধ-বিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করে যা বিতর্কিত ভূখন্ডে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধের ইতি টেনেছিল।এ ঘটনায় আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনীকে কঠোর হস্তে দমনের হুমকি দিয়েছেন।


কয়েক দশকের পুরনো সঙ্ঘাতের মধ্যস্ততায় চেষ্টারত ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্ত কূটনৈতিকদের সাথে আলোচনাকালে আলিয়েভ বলেন আর্মেনিয়ার উচিৎ হবে না আবার যুদ্ধের চেষ্টা করা।


তাদের সামরিক আগ্রাসনের দিকে না গিয়ে সর্তকতা অবলম্বন করা উচিৎ। এবার তাদেরকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হবে। এটা কারো অজানা নয়।


শনিবারের আগে নাগরনো-কারাবাখের বাহিনী বলেছিল তাদের তিনজন যোদ্ধা আজারী সেনাদের আক্রমণে আহত হয়েছে।


আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে, নাগরনো-কারাবাখের বাহিনী নিয়ন্ত্রিত দুটো গ্রামে আজারবাইজান থেকে হামলা হয়েছে। আর্মেনিয়ার কর্মকর্তারা বলেছে হিন টাগের ও কটসাবার্গ গ্রামে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়েছে। এটা গাদরাত অঞ্চলে আর্মেনিয়ার বাহিনী নিয়ন্ত্রিত একমাত্র জনপদ।


রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর একজন মুখপাত্র রিয়া নাভস্তি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের মাধ্যমে গুলি-বিনিময় হয়েছে যেখানে উভয়পক্ষকে অস্ত্রবিরতি চুক্তির প্রতি সম্মান জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানে অংশ বলে স্বীকৃত কিন্তু এটা আর্মেনীয় জাতিগোষ্ঠী অধূষ্যিত এবং কিছু দিন আগেও তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। ১৯৯০ সালের রক্তাক্ত যুদ্ধের পর আজারবাইজানের এ অঞ্চলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।


গত সেপ্টেম্বরের দিকে শুরু ৪৪ দিনের যুদ্ধের পর উভয় পক্ষের ৫ হাজার ৬০০ জন নিহত হয়। এ যদ্ধে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী নাগরনো-কারাবাখের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং আর্মেনিয়াকে নভেম্বরের শান্তিচুক্তি মানতে বাধ্য করে। এর মাধ্যমে আজারবাইজান কিছু গুরত্বপূর্ণ অঞ্চল পুনরুদ্ধার করে।


রাশিয়া এ অঞ্চলে পাঁচ বছরের জন্য প্রায় ২ হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করেছে শান্তিচুক্তি পর্যবেক্ষণের জন্য এবং শরনার্থীদের ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে।


আজারবাইজান একে বিজয় হিসাবে চিত্রিত করেছে। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের উপস্থিতিতে প্রায় ৩ হাজার সেনা, সাজোয়া যান এবং জঙ্গিবিমানের সমন্বয়ে এক কুচকাওয়াজ মাধ্যমে বিজয় উৎসব করে।


সূত্র : আলজাজিরা 


মন্তব্যসমূহ