বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, এমএইচআরএ বলছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ সক্ষম এই টিকাটি এখন ব্যবহারের জন্য নিরাপদ। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষজনের ওপর টিকার প্রয়োগ শুরু হবে।
এর মধ্যেই চার কোটি টিকার জন্য চাহিদা দিয়েছে যুক্তরাজ্য, যা দিয়ে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া যাবে। জনপ্রতি দুইটি করে ডোজ দেয়া হবে এবং খুব তাড়াতাড়ি এক কোটি টিকার ডোজ পাওয়া যাবে।
করোনা টিকার যেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যেখানে অনেক বেশি সময় লেগে যায়, সেখানে মাত্র ১০ মাসে এই টিকার আবিষ্কারের প্রক্রিয়া শেষ করল ফাইজার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকার প্রয়োগ শুরু হলেও মানুষজনকে এখনো সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে এবং করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে স্বাস্থ্য সতর্কতার নিয়মকানুন কড়াকড়িভাবে পালন করতে হবে। তার মানে এখনো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সেই সঙ্গে উপসর্গ দেখা গিলেই পরীক্ষা করাতে হবে এবং তাদের বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।
এখনও পর্যন্ত ছয়টি দেশে ৪৩ হাজার ৫০০ জনের শরীরে ফাইজার ও বায়োএনটেক টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এবং এতে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু দেখা যায়নি। এই টিকাটির ক্ষেত্রে একেবারে ভিন্ন ধরনের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে যাতে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে প্রশিক্ষিত করে তোলার জন্য ভাইরাসটির জেনেটিক কোড শরীরে ইনজেক্ট করা হয়।
আগের পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে টিকা দেওয়ার ফলে শরীরে এন্টিবডি এবং রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার আরও একটি অংশ যা টি সেল নামে পরিচিত সেটিও তৈরি হয়। তিন সপ্তাহ ব্যবধানে এই টিকার দুটো ডোজ দিতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্কে এই টিকার পরীক্ষা চালানো হয়েছে।
এদিকে, বিশ্বে ফের ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে মহামারি করোনা ভাইরাস। প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। যা এখন পর্যন্ত একদিনে মৃত্যুর আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬ কোটি ৪১ লাখ। আর এ মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪ লাখ ৮৬ হাজার।
সুত্র: বিবিসি
মন্তব্যসমূহ