হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

লিবিয়ার যুদ্ধবিরতি চুক্তি ‘বিশ্বাসযোগ্য’ নয়: এরদোগান

 





লিবিয়ার যুদ্ধরত দলগুলির মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। 


শুক্রবার ইস্তাম্বুলে জুমার নামাজের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন। 


তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির এই চুক্তি (লিবিয়ার) উচ্চপর্যায় থেকে করা হয়নি।  সময় বলে দেবে নিম্নপর্যায়ের ব্যক্তিদের করা ওই চুক্তি কতদিন বজায় থাকে। 


জাতিসংঘ মিশন জানায়, দুই পক্ষের ৫ জন করে সামরিক সদস্য জেনেভায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়।  ঐতিহাসিক এ চুক্তি লিবিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 


এসময় এরদোগান তুর্কি নাগরিকদের করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন।  তিনি বলেন,  ‘মাস্ক, দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধিকে আমাদের অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক। ’


লিবিয়ায় যুদ্ধরত দুইপক্ষ দেশটির স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দিয়ে শান্তিচুক্তি করতে সম্মত হয়েছে।  শুক্রবার যুদ্ধরত প্রধান দুই পক্ষ এ পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।  এর ফলে কয়েক বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সমাপ্তি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  


এ ছাড়াও দেশটি থেকে রাশিয়া, তুরস্ক ও অন্যাক্ত আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সেনাদের ফিরিয়ে নেয়া হতে পারে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। 


শুক্রবার জাতিসংঘের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়, লিবিয়ায় যুদ্ধরত উভয় পক্ষের সামরিক প্রধানরা আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। একে ঐতিহাসিক চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জাতিসংঘ।  এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চলা দেশটিতে শান্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। 


আলজাজিরার খবরে বলা হয়, শান্তিচুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে জাতিসংঘের দূত স্টিফেন টুরকো উইলিয়ামস।  যিনি এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা ছিলেন।  


এতে স্বাক্ষর করেছে খলিফা হাফতারের বাহিনী এলএনএ এবং ত্রিপোলিভিত্তিক সরকার জিএনএ।  ক্ষমতার প্রক্রিয়া কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী মাসে তিউনিশিয়ায় বসবে দুইপক্ষ।


জাতিসংঘের দূত স্টিফেন উইলিয়ামসের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, আগামী ৩ মাসের মধ্যে দেশটিতে থাকা বিভিন্ন দেশের সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। 


স্টিফেন উইলিয়ামস বলেন, ‘স্রষ্টার ইচ্ছায় এটা পুরো লিবিয়ার শান্তির চাবিকাঠি হতে পারে। যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে দুই পক্ষকে রাজি করাতে অনেকটা কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।'


লিবিয়াকে ঘিরে তুরস্ক-মিসরের যুদ্ধের আশংকা 


লিবিয়ায় তুরস্ক-মিসরের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের দাবানল বেজে উঠেছিল। 


আলজাজিরা জানিয়েছে, লিবিয়ার বিদ্রোহী নেতা জেনারেল খলিফা হাফতারের অনুগত সংসদ দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপ করার জন্য মিসরকে অনুমোদন দেয়ার পর ওই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 


অন্যদিকে যুদ্ধ বিরতির আগেই লিবিয়ার সিত্রে শহর এবং যুফরা বিমানঘাঁটি ত্রিপোলি ভিত্তিক জাতিসংঘ অনুমোদিত সরকারের কাছে হস্তান্তর করার শর্ত দেয় তুরস্ক। 


যেভাবে যুদ্ধের শুরু


২০১১ সালে আরব বসন্তের প্রভাবে বিক্ষোভ ও গৃহযুদ্ধে লিবিয়ার দীর্ঘকালীন শাসক মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফির পদচ্যুতি ও নিহত হওয়ার পর দেশটি দু’পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ে।


জাতিসংঘ স্বীকৃত লিবিয়ার সরকার রাজধানী ত্রিপোলিসহ দেশটির পশ্চিমাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। 


অন্যদিকে বেনগাজিকে কেন্দ্র করে মিসর, জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থিত বিদ্রোহী জেনারেল খলিফা হাফতারের বাহিনী দেশটির পূর্বাঞ্চলের দখল নেয়।

মন্তব্যসমূহ