গাজার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭৩

  যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার উত্তরে বেইত লাহিয়ার একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর  হামলায় কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি এই তথ্য দিয়েছে। তবে ইসরায়েল বলেছে, গাজার একটি ‘সন্ত্রাসী’ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। খবর এএফপির। সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘গাজার উত্তরে বেইত লাহিয়ার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলার পর আমাদের এজেন্সির কর্মীরা ৭৩ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অনেকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও বেশ কয়েকজন শহীদের মরদেহ রয়ে গেছে।’ মাহমুদ বাসাল জানান, শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিনের শেষ ভাগে ইসরায়েলের চালানো ওই হামলায় বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু রয়েছে। হামলাটি চালানো হয় একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ইসরায়েলের সামরিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রতিরক্ষা বিভাগের (আইডিএফ) কাছে আসা তথ্যের সঙ্গে হতাহতের সংখ্যার মিল নেই। তবে, এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত বিবরণও তারা দেয়নি বা কাদের লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছ

অবশেষে ইসরাইল-হামাসের পাল্টাপাল্টি হামলা বন্ধে সমঝোতা




ফিলিস্তিনের গাজার গণতান্ত্রিক শাসক গোষ্ঠি হামাস এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল গত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা পাল্টাপাল্টি হামলা বন্ধে সমঝোতায় পৌঁছেছে। সোমবার (৩১ আগস্ট) কাতারের মধ্যস্ততায় এই সমঝোতা হয় বলে জানিয়েছেন হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনোয়ার।


তিনি জানান, কাতারের দূত মোহাম্মদ আল এমাদির সঙ্গে আলোচনার পর সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধে সমঝোতায় পৌঁছানো গেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে ইসরাইলের পক্ষ থেকে কোন বিবৃতি পাওয়া যায়নি।   

 

গত ৬ আগস্ট থেকে প্রায় প্রতিদিনই গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, গাজা উপত্যকা থেকে নিয়মিত ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বিস্ফোরক ভর্তি বেলুন পাঠানো এবং রকেট হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে এসব হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি এসব বেলুনের কারণে গত কয়েক দিনে সে দেশে চারশ’র বেশি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে।


সমঝোতা অনুসারে  ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বেলুন ও অন্যান্য হামলা সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে। বিনিময়ে ১৩ বছর ধরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মঙ্গলবার থেকে তেল সরবরাহ পুনরায় শুরু হবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রটি পুনরায় সচল হবে। এছাড়া গাজার ৫০ শতাংশেরও বেশি বেকারত্ব নিরসনে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। 


সীমান্তের এই উত্তেজনা নিরসনে দুই পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যেতে থাকে মিসরের একটি প্রতিনিধি দল। ওই আলোচনায় যুক্ত হন কাতারের দূত মোহাম্মদ আল এমাদি। তেল আবিবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি হামাস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।



২০১৮ সালের নভেম্বরে কাতারের মধ্যস্থতায় প্রথম বারের মতো ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। বেশ কয়েকবার এর মেয়াদ বাড়ানো হলেও পরে ইসরায়েলি আগ্রাসন তীব্র হয়ে উঠলে তা এক সময়ে অকার্যকর হয়ে পড়ে। এর আগে ২০০৮, ২০১২ ও ২০১৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে হামাস। 

মন্তব্যসমূহ