শুক্রবার ক্লাসের সিদ্ধান্ত হয়নি, ভুলবশত ফেসবুকে পোস্ট হয়েছিল

শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বরাতে যে বক্তব্যটি শিক্ষামন্ত্রণালয় তাদের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট দিয়েছিল তা ভুলবশত বলে জানিয়েছে তারা। অপর এক পোস্টে আজ রোববার (৫ মে) বিকেলে ৪টার দিকে এই তথ্য জানায় তারা। এই পোস্টে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে,  শুক্রবারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ফেসবুক পেজ থেকে আগের পোস্টটি সরিয়ে নতুন পোস্টে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে ‘শুক্রবার শিক্ষা খোলার বিষয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড পেজে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে দেওয়া তথ্য ভুলবশত পোস্ট করা হয়েছে। এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত শনিবারের পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’  এর আগে একই পেজে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের এখন বছরে স্কুলের মোট কর্মদিবস ১৮৫টি। এর মধ্যে ২০ দিন নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নের জন্য রাখা হয়েছে। স্কুলের কর্মদিবস যদি আরও কমে যায়, শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস নেওয়া হবে।’

তুরস্ক পরাশক্তি হওয়ার পথে যে বার্তা দিচ্ছে



নিজেদের ইতিহাসের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে তুরস্ক। ধারনা করা হচ্ছে কৃষ্ণ সাগরে আবিষ্কার হওয়া গ্যাসক্ষেত্র থেকে ৩২০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস পাওয়া যেতে পারে। এরদোয়ান জানান, ২০২৩ সাল থেকে এই গ্যাস ক্ষেত্র থেকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য গ্যাস উৎপাদন করা হবে।


"তুরস্ক তার ইতিহাসের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে" এমন তথ্য তুরস্ক ও বিশ্বের গণমাধ্যমকে জানিয়ে এরদোয়ান জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ব জ্বালানি বাজারে এই গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার তার দেশকে গেম-চেঞ্জার হয়ে উঠতে সহায়তা করবে। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, জ্বালানি সমস্যা সমাধানে তুরস্ক এখন বদ্ধপরিকর। 


বিষয়টি নিয়ে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে এরোদোয়ান বলেন, পরম করুণাময় আল্লাহর দেয়া এই উপহার তুরস্কের অর্থনীতিতে উন্নতি এবং দেশের জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর জন্য সহায়তা করবে। তিনি আরও বলেন, 'পালনকর্তা আমাদের জন্য অভূতপূর্ব সম্পদের দ্বার উন্মুক্ত করেছেন।' এদিকে দেশটির জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে এই গ্যাসের মজুদ আবিষ্কারের কারণে তুরস্কের গ্যাস আমদানি অনেকাংশে কমে যাবে। সেই সঙ্গে তুরস্ক স্বাধীনভাবে এই সম্পদে তাদের কর্তৃত্ব অর্জন করবে। সেই সঙ্গে জ্বালানী খাতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় অনেকাংশে কমে যাবে। তুরস্ক সাধারণ রাশিয়া, আজারবাইজান এবং ইরান থেকে গ্যাস আমদানি করে। 


এদিকে এরদোয়ানের জামাতা বেরাত আলবাইরাক যিনি দেশটির অর্থমন্ত্রী, তিনি বলেছেন, তুর্কি সরকার আশা করছেন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার দেশের রিজার্ভে স্থিতিশীলতা আনতে সহায়তা করবে। এরদোয়ান নিজেও জ্বালানী খাতের এই আবিষ্কারে উৎসাহী ছিলেন। দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে তিনি এতটাই আশাবাদী ছিলেন প্রায় বলতেন দেশটির জ্বালানী বিশেষজ্ঞরা অবশ্যই গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করবেন। সেই সঙ্গে যখন জানলেন এই আবিষ্কারের কথা তখন তিনি বলেন, এই আবিষ্কার চলতেই থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা জ্বালানী রফতানিতে সক্ষম হবো। 



অন্যদিকে পশ্চিমা গণমাধ্যম এবং তাদের জ্বালানী বিষয়ক গবেষণা মাধ্যমের প্রচার ছিল, গভীর সমুদ্রে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারে তুরস্কের কোন সক্ষমতা নেই। কারণ হিসেবে বলা হতো এই কাজের জন্যে যে প্রয়োজনীয় দক্ষ মানুষের দরকার তা তুরস্কের নেই। তবে এখনও কোন ধরনের বিদেশি অংশীদার ছাড়া এবং সম্পূর্ণ নিজস্ব সরঞ্জাম ব্যবহার করে গ্যাস অনুসন্ধান করতে সক্ষম হয়েছে তারা। এই আবিষ্কারের পর, তুর্কি বিশেষজ্ঞরা তাদের দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করে প্রমাণ করেছেন যে তারা পুরোপুরিভাবে কাজটি করতে সক্ষম। বিষয়টি নিয়ে এরদোয়ান নিজেই বলেছেন, বাইরের কোন সাহায্য ছাড়া এবং বিপুল পরিমাণ খরচ না করেই তারা এটি করতে সক্ষম হয়েছে। 


অবশ্য বৈশ্বিক জ্বালানি খাত বিষয়ক স্বনামধন্য পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেনজি'র বিশেষজ্ঞ টমাস পার্দি বলেছেন, "এটি তুরস্কের সর্বকালের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার এবং এটি ২০২০ সালের বৃহত্তম বৈশ্বিক আবিষ্কারগুলির মধ্যে একটি।"


এদিকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরাও এখন বলছেন, তুরস্ক বিশ্বের পরাশক্তি হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল এই আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। সেই সঙ্গে নিজেদের সক্ষমতা দিয়ে নিজেদের চাহিদা পূরণে স্বাধীন শক্তিতে পরিণত হয়েছে তারা। আর সেইদিন দূরে নয় যেদিন তুরস্ককে আর কারো ভরসায় চলতে হবে না। তারা আরও জানাচ্ছেন, দেশটি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী নিজেদের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটি স্পষ্ট বোঝা যায় বিপুল সংখ্যক আন্তর্জাতিক পর্যটকের কাছে এখন অন্যতম পর্যটন স্থান তুরস্ক।


তবে সমালোচকরা বলছেন নতুন এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাওয়া গ্যাস বাজারে আসতে সময় নেবে। তুরস্কের জ্বালানী ক্ষেত্রে স্বাধীন সক্ষমতা অর্জন এখনো অনেক দূরে। এরপরেও এখন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন তুরস্কের ভাষায় ইতিহাসের এই বড় গ্যাস ক্ষেত্রের সন্ধানের পর আঙ্কারা দুটি বার্তা দিয়েছে; এক. তার মিত্রদের জন্য, যে তারা শক্তিশালী দেশে পরিণত হয়েছে। তাদের ওপর ভরসা রাখা যায়। আরেকটি বার্তা শত্রুদের জন্যে সেটি হচ্ছে, তারা এতটাই শক্তিশালী যে, যত বড় আঘাত এবং সমস্যা আসুক না কেন সকল আঘাত ও সমস্যার সমাধানে তুরস্ক একাই যথেষ্ট।


সূত্র: মিডল ইস্ট আই। ভাষান্তর: শাশ্বত সত্য।

মন্তব্যসমূহ