গাজার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৭৩

  যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার উত্তরে বেইত লাহিয়ার একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর  হামলায় কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি এই তথ্য দিয়েছে। তবে ইসরায়েল বলেছে, গাজার একটি ‘সন্ত্রাসী’ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। খবর এএফপির। সিভিল ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘গাজার উত্তরে বেইত লাহিয়ার আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলার পর আমাদের এজেন্সির কর্মীরা ৭৩ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অনেকে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও বেশ কয়েকজন শহীদের মরদেহ রয়ে গেছে।’ মাহমুদ বাসাল জানান, শনিবার (১৯ অক্টোবর) দিনের শেষ ভাগে ইসরায়েলের চালানো ওই হামলায় বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী ও শিশু রয়েছে। হামলাটি চালানো হয় একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ইসরায়েলের সামরিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রতিরক্ষা বিভাগের (আইডিএফ) কাছে আসা তথ্যের সঙ্গে হতাহতের সংখ্যার মিল নেই। তবে, এ বিষয়ে কোনো বিস্তারিত বিবরণও তারা দেয়নি বা কাদের লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছ

ইয়েমেনে সৌদি জোটের বিমান হামলায় ৯ শিশু নিহত

 



ইয়েমেনের উত্তরোঞ্চলে বিমান হামলায় অন্তত ৯ শিশু নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চলতি মাসে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটিতে শিশুদের লক্ষ্য করে চালানো দ্বিতীয় ভয়াবহ হামলা এটি।


শুক্রবার (০৬ আগস্ট) জাতিসংঘের ইয়েমেন বিষয়ক মানবাধিকার সমন্বয়ক লিসে গ্র্যান্ডে এক বিবৃতে বলেন, হতাহতদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। তারা গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলো। বৃহস্পতিবার হামলার ঘটনা ঘটে বলেও জানান তিনি। হামলায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ ধরনের হামলা চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্য।


উত্তরাঞ্চলের জাওফ প্রদেশ হাউথি বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ করে। বিদ্রোহীদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বৃহস্পতিবার সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের  সমর্থপুষ্ট ইয়েমেন সরকার উত্তরাঞ্চীয় এলাকায় অন্তত ৬ দফা বিমান হামলা চালায়। প্রাথমিকভাবে তারা জানায়, অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।


হাউথি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গণমাধ্যম এবং স্বেচ্ছাসেবীদের প্রবেশাধিকার সীমিত। তাই ওইসব এলাকায় কী ঘটে তার বিস্তারিত জানা খুবই কঠিন।


সৌদি সামরিক জোটের মুখপাত্র, তুর্কি আল মালিকি সৌদি গণমাধ্যম আশরাক আল আওসাতকে বলেন, বেসামরকি নাগরিক হতাহতের অভিযোগের বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি আমরা।


গেলো কয়েক বছর ধরে ইয়েমেনে হাউথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে সৌদি জোট। তাদের অব্যাহত বিমান হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বিয়ের অনুষ্ঠান। জোটের এমন নিষ্ঠুরতা আন্তর্জাতিক অঙ্গণে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তাদের মিত্রদের ভাবমূর্তিকে চরম সংকটে মধ্যে ফেলেছে।


১৪ জুলাই জাতিসংঘ জানায়, হাজ্জাহ প্রদেশে বিমান হামলায় ৭ শিশু নিহত হয়েছে। যাদের কয়েকজনের বয়স দু’বছরেরও কম। হাউথি বিদ্রোহী এবং স্বেচ্ছাসেবীদের বরাতে গণমাধ্যম জানায়, নতুন জন্ম নেয়া শিশুর নাম রাখার অনুষ্ঠানে পরদিনই হামলা চালায় সৌদি জোট। নিহত হয় ৬ শিশুসহ ১০ জন।


২০১৪ সালে ইরান সমর্থিত হাউথিরা রাজধানী সানা দখল করে দেশটির জাতিসংঘ স্বীকৃত সরকার প্রধান আবদ রাব্বু মানসুর হাদিকে নির্বাসনে যেতে বাধ্য করে। পরের বছরই সৌদি আরব সামরিক জোট গঠন করে। বলা হয় ইয়েমেনে ইরানের প্রভাব প্রতিহিত করাই তাদের লক্ষ্য।


ইয়েমেন সংঘাতে ১  লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৩০ লাখের বেশি। দুই তৃতীয়াংশ মানুষ নির্ভর করে খাদ্য সহায়তার উপর। ইয়েমেনের এ পরিস্থিতিকে পৃথিবীর ভয়াবহতম মানবিক সংকট আখ্যা দেয়া হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ