হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

করোনার মধ্যেই নাসার পক্ষ থেকে এলো নতুন দুঃসংবাদ



সারা পৃথিবীতে মানুষ আজ করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আতঙ্কিত। কোনও ধরণের অস্ত্র নয়; কিংবা কোনও ধরণের পারমাণবিক বোমা নয়; ক্ষুদ্র সামান্য কয়েক ন্যানো মিটারের একটি অণুজীবের কাছে সারা পৃথিবীর মানুষ আজ অসহায়।

সারা পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত এ করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আক্রান্ত কেউ না কেউ মৃত্যুবরণ করছেন এবং শুধুমাত্র ২০ মার্চ শুধু ইতালিতেই একদিনে ৬২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ২,৭৬,৪৬২ জন কোভিড-১৯ খ্যাত নোভেল করোনা ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১১,৪১৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আমরা কেউই বলতে পারি না এ পরিস্থিতি আরও কত দিন অব্যাহত থাকবে।

এমন একটি ক্রান্তিকালীন মুহূর্তে মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসার পক্ষ থেকে দেওয়া হলো একটি দুঃসংবাদ। আসন্ন ২৯ এপ্রিল পৃথিবীর কক্ষপথের কাছ থেকে প্রবাহিত হয়ে যাবে একটি শক্তিশালী গ্রহাণুর। নাসার পক্ষ থেকে এ গ্রহাণুটির নাম দেওয়া হয়েছে Asteroid 52768 বা 1998OR2.

যদিও এ গ্রহাণুটি সরাসরি পৃথিবীর ওপর কোনও ধরণের আঘাত হানবে না এবং পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে এ গ্রহাণুর দূরত্ব হবে আনুমানিক চার লক্ষ মাইলের মতো। যা পৃথিবীর থেকে চাঁদের দূরত্বের ১৬ গুণেরও বেশি। যদিও পৃথিবীর কক্ষপথের থেকে ৩.৯ লক্ষ মাইলের অভ্যন্তরে এ গ্রহাণুটি আসবে না কিন্তু এ গ্রহাণুটির বিশাল আকৃতির জন্য কিছুটা হলেও শঙ্কা থেকে যায়।

আনুমানিক ১.১ থেকে ২.৫ মাইল ব্যাস বিশিষ্ট এ গ্রহাণুটি ঘণ্টায় বিশ হাজার মাইল বেগে পৃথিবীর কক্ষপথের কাছ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যাবে, যার প্রভাবে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রে একটি পরিবর্তন আসতে পারে বলে কোনও কোনও বিজ্ঞানী মনে করছেন।

একই সঙ্গে এ গ্রহাণুর প্রভাবে পৃথিবীর অনেক জায়গা সাময়িক সময়ের জন্য সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত হতে পারে এবং একই সঙ্গে সৃষ্ট অ্যাসিড বৃষ্টির প্রভাবে পৃথিবীর এ সকল অঞ্চলে চাষাবাদের ক্ষেত্রেও একটি বিশাল বিপর্যয় নেমে আসতে পারে বলে অনেক বিজ্ঞানী মনে করছেন।

যদিও নাসার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সরাসরি এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কোনও কিছু বলা হয়নি। বিভিন্ন কারণে একটি গ্রহাণু তার গতিপথের পরিবর্তন করতে পারে। যেমন: চলার পথে কোনও একটি নির্দিষ্ট গ্রহের কিংবা বৃহৎ উল্কাপিণ্ডের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্ৰভাবে একটি গ্রহাণু তার গতিপথ পরিবর্তিত করতে পারে।

আবার ইয়ারকোভজি ইফেক্টের কথাও আমরা অনেকে শুনেছি। অভ্যন্তরীণ কিংবা বাহ্যিক কোনো তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাবে একটি গ্রহাণুর তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটতে পারে। এর ফলে গ্রহাণুটি ঘুরে যেতে পারে, এমনকি কক্ষপথেরও পরিবর্তন করতে পারে। অর্থাৎ ইয়ারকোভজি ইফেক্ট। হয়তোবা সাময়িকভাবে মনে হচ্ছে যে ৪০,০০০ মাইল বিশাল একটি দূরত্ব কিন্তু যে কোনও সময়ের গতিপথের পরিবর্তন কিংবা তেজস্ক্রিয় বিকিরণ বিশেষ করে পৃথিবীর পৃষ্ঠের ওপর একটি প্রভাব ফেলতে পারে।

আজকের থেকে আনুমানিক ৬৬ লক্ষ বছর পূর্বে পৃথিবীর পৃষ্ঠে এ রকম একটি শক্তিশালী গ্রহাণুর আঘাতে পৃথিবী থেকে ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটেছিল। আসলে শুধু ডাইনোসরই নয়, ধারণা করা হয় এ গ্রহাণুর প্রভাবে সে সময় পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বসবাস করা প্রাণীকুলের শতকরা ৭০ ভাগ প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল।

"ডাইনোসর কিলার অ্যাস্টোরয়েড" খ্যাত এ গ্রহাণুর আঘাতে মেক্সিকোর ইয়োকাটোন দ্বীপের কাছে একটি বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে যার ব্যাস স্থানভেদে ৬.৮ মাইল থেকে ৫০.৩ মাইল এবং ধারণা করা হয় এ গ্রহাণুর আঘাতের প্রভাবে পৃথিবীর সামগ্রিক জলবায়ুর এক বিশাল পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল।

যদিও Asteroid 52768 সরাসরি পৃথিবীর বুকে আঘাত হানছে না এবং পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে এর নিকটতম দূরত্ব হবে প্রায় চার লক্ষ মাইলের মতো। তবুও এর বিশাল আকৃতির জন্য এবং একই সঙ্গে এর উচ্চ গতিবেগ ও বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতির কারণে কারণে কিছুটা হলেও শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে আমাদের সকলের জন্য।

রাকিব হাসান, শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ফিজিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, ইউনিভার্সিটি অব নোভা গোরিছা, স্লোভেনিয়া।

সুত্র: যুগান্তর

মন্তব্যসমূহ