হিজাব পরে চাকরির ওপর জার্মানির বার্লিন রাজ্যের নিষেধাজ্ঞা আরোপকে অবৈধ ঘোষণা করেছে দেশটির একটি আদালত। বার্লিনের ‘নিরপেক্ষতা’ আইনের কারণে এক মুসলিম নারী শিক্ষককে হিজাব পরে স্কুলে পাঠদানে বাধা দেয়া হলে তিনি আদালতের আশ্রয় নেন। আদালতের রায়ে বলা হয়, এর মাধ্যমে ওই শিক্ষকের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বার্লিনের শ্রম আদালত এ ঐতিহাসিক রায় দেয়।
রায়ে বলা হয়, পাবলিক স্কুলগুলোতে মুসলিম নারীদের হিজাব পরার বিষয়টি বার্লিন অস্বীকার করতে পারে না কারণ এটা তাদের ধর্মের একটি অংশ।
এর আগে ওই নারী শিক্ষিকা অভিযোগ করেছিলেন, তিনি কোনো প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারবেন না কারণ তার হিজাব বার্লিনের নিরপেক্ষতা আইনের লঙ্ঘন।
প্রতিবাদী ওই নারী গত কয়েক বছর ধরে বার্লিনের একটি স্কুলে ইসলামিক স্টাডিজের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছিলেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তিনি ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন।
রায় পক্ষে যাওয়ায় এখন ওই শিক্ষককে দুই মাসের বেতন এবং তার আইনি খরচের অংশ হিসেবে সরকারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
তার আইনজীবী মরিয়ম হাশেমী বলেন, ‘এই রায়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট এবং স্বস্তি বোধ করছি।’
আদালতের রায়ে আরো বলা হয়, এটা স্কুলের আওতার মধ্যে থাকায় বাদীর পক্ষে রায় দেয়া হয়েছে। এছাড়াও, ধর্মীয় স্বাধীনতার ভিত্তিতে এটা নিরপেক্ষতা আইনের একটি ব্যতিক্রম।
আদালত বলেন, কেবল হিজাবের কারণে চাকরি থেকে তার প্রার্থিতা খারিজ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে স্কুল কর্তৃপক্ষ বৈষম্য-বিরোধী বিধি ভঙ্গ করেছে। স্কার্ফ বা হিজাব পরার কারণে স্কুলের শান্তি ভঙ্গ হয়েছে এর স্বপক্ষে যুক্তিসঙ্গত প্রমাণ বার্লিন দিতে পারেনি।
বার্লিন যুক্তি দেখান যে, তারা আবেদনকারীর সঙ্গে সমঝোতায় আসতে প্রচেষ্টা চালিয়েছে। হিজাবের পরিবর্তে তারা ওই নারী শিক্ষককে পরচুলা পরার পরামর্শ দেন। কারণ তাদের মতে এটা ‘মতাদর্শগতভাবে নিরপেক্ষ’।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ওই পরামর্শকে হাস্যকর উল্লেখ করে বলেন, ধর্মীয় দিক থেকেও পরচুলা পরা অন্যায্য।
জার্মানির শীর্ষ আদালত ইতোমধ্যে দুইবার রায় দিয়েছে যে, পাবলিক সেক্টরে মুসলিমদের হিজাবের ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা অসাংবিধানিক।
সূত্র: ডয়চে ভেলে ইংলিশ
মন্তব্যসমূহ