দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই-কে অভিশংসিত করতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে এ ব্যাপারে মৌখিকভাবে যুক্তি তর্ক শুনতে শুরু করেছে সেদেশের আদালত। গত ডিসেম্বরে পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে পার্ক জিউন হাইকে অভিশংসিত করার পক্ষে রায় আসার পর এ বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো। পার্লামেন্টে ভোটাভুটির পর থেকে পার্ক সাময়িক পদচ্যুত রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আইনজীবীরা পার্কের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে শুরু করেন। প্রধান প্রসিকিউটর কুয়েওন সিয়ং ডং আদালতে দাবি করেন, সংবিধান ও অপরাধ আইন লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে পার্ক জনগণের আস্থাকে ‘ব্যাপক ও ভয়াবহভাবে’ ধোঁকা দিয়েছেন।
পার্কের আইনজীবী লী জুং-হুয়ানদাবি করেন, ‘অভিশংসন বিলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাতে প্রমাণের উপস্থিতি কম রয়েছে এবং তা আইনগত ভিত্তি তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ সেগুলো অভিযোগ এবং মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে করা হয়েছে, অপরাধীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে নয়।’
পার্ককে স্থায়ীভাবে পদচ্যুত করা হবে নাকি পুনর্বহাল করা হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ছয় মাস সময় পাবে আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন পার্ক। তার আরও ১৫ মাস মেয়াদ আছে। তবে দায়িত্বগ্রহণের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে। পার্কের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ, তিনি তার বন্ধুকে অবৈধভাবে ক্ষমতার নেপথ্যে থেকে দুর্নীতি করার সুযোগ করে দেন। পার্ক জিউন-হাইয়ের বন্ধু চোই সুন-সিল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সম্পর্কের সুবাদে অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদানের নামে ৬৫.৫ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেন। এর মধ্যে স্যামসাং এবং হুন্দাই-এর মতো কোম্পানিও রয়েছে। ওই অর্থ সন্দেহভাজন একটি ফাউন্ডেশনের নামে নেওয়া হয়। পরে তিনি সেখান থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হন। পার্ক জিউনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বন্ধুকে ওই অর্থ তুলতে সাহায্য করেন। তিনি চোই সুন-সিলকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছিলেন। প্রতারণা, বলপ্রয়োগ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে চোই সুন-সিলকে চলতি মাসের গোড়ার দিকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া গোপন রাষ্ট্রীয় নথি প্রকাশের অভিযোগে প্রেসিডেন্টের অপর এক সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়।
বাংলা ট্রিবিউন
মন্তব্যসমূহ