হিজবুল্লাহর ভয়াবহ রকেট হামলা, প্রতিরোধে ব্যর্থ ইসরাইল

লেবানন থেকে ফিলিস্তিনির হাইফা এবং গালিলি অঞ্চলের দিকে অন্তত ৩৫টি রকেট ছোঁড়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সেনা সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ লেবানন থেকে এই রকেট হামলা চালানো হয়, এবং এসব রকেট হাইফা এবং পশ্চিম গালিলির দখলকৃত অঞ্চলে আঘাত হানে। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনো রকেট বিধ্বস্ত করতে সক্ষম হয়নি। হাইফা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রকেট হামলার সতর্কবার্তা শোনার খবর পাওয়া গেছে। আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেল জানায়, হাইফার উত্তরে আল-কিরিওত এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জায়নিস্ট গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দখলকৃত পশ্চিম গালিলির ইয়ারা শহরে এক ভবন হিজবুল্লাহর মিসাইল হামলায় পুড়ে যায়। অপরদিকে, আভিভিম, ইয়রাউনসহ ওপরের গালিলির বেশ কয়েকটি শহরে রকেট হামলার সতর্কবার্তা বাজানো হয়। সূত্র: মেহের নিউজ

বিপন্ন রোহিঙ্গাদের সাথে মানবিক আচরণের তাগিদ


কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের একটি শিবিরে গত আট বছর ধরে থাকেন মায়ানমারের মংডু থেকে আসা মোহাম্মদ নূর।

মোহাম্মাদ নূর বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহে মায়ানমারের রাখাইন থেকে সহস্রাধিক পরিবার এসে উঠেছে তাদের ক্যাম্পে।

তাদের চলছে কিভাবে? মোহাম্মদ নূর বলছিলেন, ‘মুসলমান হিসেবে তাদেরকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি, আমাদের এক একটি পরিবারের সাথে তাদের দু-তিনটি করে পরিবার থাকছে। আমরা আমাদের খাবার তাদের সাথে ভাগাভাগি করে খাচ্ছি। খুব কষ্ট হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি সাহায্য এখনো আসছে না, তবে কোনমতে দিন পার হয়ে যাচ্ছে’।


স্থানীয় বিভিন্ন অধিবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যাচ্ছে, বিগত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে যত রোহিঙ্গা মুসলমান আশ্রয়ের জন্য প্রবেশ করেছে, তাদের বেশীরভাগই টেকনাফের দুটি এবং কুতুপালংয়ের একটি অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরে এসে উঠছে।

বাকী অনেকেই উঠছে কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আগে থেকেই অবস্থানরত আত্মীয়স্বজনের কাছে।

সরকার পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখবে এমন একটি বক্তব্য দিলেও কিভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানো হবে সে ব্যাপারে কক্সবাজারের স্থানীয় পর্যায়র সরকারি কর্মকর্তারা এখনো কোনো দিকনির্দেশনা পাননি বলে জানাচ্ছেন।

জেলা প্রশাসক আলী হোসেন বলছেন, তিনি সার্বক্ষণিকভাবেই পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন।

বেসরকারি সংস্থাগুলো, যারা মূলত কক্সবাজারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মধ্যে কাজ করে, তাদের কেউ কেউ বিচ্ছিন্নভাবে পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগিতা দিচ্ছেন বলে সংবাদদাতা উল্লেখ করছেন, তবে সেটি ব্যাপকভিত্তিক নয়।

অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন আইওএম বলছে, তাদের আগে থেকেই কক্সবাজারের অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য নানারকম সেবা দেবার ব্যবস্থা রয়েছে।

এখন নতুন করে যারা আসছে, তারাও সেই সেবা পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

বাংলাদেশে আইওএমের মুখপাত্র পেপি সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা কক্সেসবাজারের অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্যগত সেবা, স্যানিটেশন,হাইজিন ইত্যাদির পাশাপাশি আমাদের অংশীদারদের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তাও দিয়ে থাকি। সেখানে যেই থাকুক না কেনো, তার যদি সত্যিকারার্থেই আমাদের এই সেবাগুলো প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা সে পাবে’।

তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা কারো কাছে জানতে চাইছি না যে সে নতুন এসেছে নাকি আগে থেকেই আছে। ফলে সীমান্তের ওপাশে সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে যদি কেউ এপাশে চলে এসে থাকে, তারাও আমাদের সেবা পাওয়ার উপযুক্ত’।

এদিকে মংডু সীমান্তবর্তী টেকনাফের একটি ইউনিয়ন হোয়াইক্যাং, যেখান দিয়ে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, সেখানকার চেয়ারম্যান নূর আহমেদ আনোয়ারী বলছেন, স্থানীয়ভাবে অনেক বাংলাদেশিই পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করছেন এবং সাহায্য সহযোগিতা দিচ্ছেন।

জানা যাচ্ছে, সোমবার সকালে টেকনাফে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বৈঠক হয়, বৈঠকে স্থানীয় সংসদ সদস্যও অংশ গ্রহণ করেন এবং তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদেরকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে তথ্য সন্নিবেশ করবার নির্দেশ দিয়েছেন।

এসব জনপ্রতিনিধিদের পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সাথে কোনো ধরণের কোনো খারাপ আচরণ না করবার জন্যও বলা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি

মন্তব্যসমূহ